নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ বাহুবলে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে খরস্রোতা করাঙ্গী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রাস্তাঘাট পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে স্কুল-মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি। গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, টানা চার-পাঁচ দিন অনবরত বৃষ্টির কারণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। এতে আউশ ধানসহ মৌসুমি ফসলের জমিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, যথাযথ মেরামত না করায় উপজেলার কাঁচা সড়কগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বিড়ম্বনায় পড়ছেন পথচারীরা। মুষলধারে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মাধবিছড়ার পানি উপচে ডুবাঐ বাজার প্লাবিত হয়েছে। হিলালপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রবেশ করেছে পানি। স্থানে স্থানে ছড়াটি ভরাট করার ফলে পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় এলাকা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সাতকাপন ইউনিয়নের ২৯ নং বিঞ্চুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও রাস্তা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) পাঠদান সম্ভব হয়নি। দেখা গেছে, স্কুলের রাস্তায় জাল ফেলে মাছ ধরছেন লোকজন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রীপা দত্ত জানান, সকালে কিছু শিক্ষার্থী স্কুলে আসলেও পানি বাড়তে থাকায় অভিভাবকরা এসে ছাত্র ছাত্রীদের বাড়ি নিয়ে যান। বিদ্যালয়টি কার্যত পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এর পরও দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বিদ্যালয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। একই চিত্র সদর ইউনিয়নের দশকাহনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। রাস্তা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিদ্যালয়ে যেতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। আরো কয়েকটি স্কুল ও মাদ্রাসায় বৃষ্টি ও যাতায়াত ব্যবস্থার কারণে পাঠদান হয়নি। এছাড়া উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের পাইকপাড়া, হিমারগাঁও ও চিচিরকোট গ্রামের কাছে করাঙ্গী নদীর পানি উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। হিমারগাঁও গ্রামের আব্দুল জব্বার বলেন, এই জলাবদ্ধতা পুরনো। এ অঞ্চলের মানুষের দুঃখে পরিণত হয়েছে টানা বৃষ্টির পানি। প্রতিবছর টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত হয় আমাদের গ্রাম। তারপরও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কোনো মাথা ব্যথা নেই। আমরা এ থেকে স্থায়ীভাবে পরিত্রাণ আশা করি। হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ জানান, ওই এলাকায় আমাদের কোনো স্থায়ী বাঁধ নেই। তবে কয়েকবার জনস্বার্থে রিপেয়ার করা হয়েছে।
Leave a Reply