বাহুবল প্রতিনিধি ॥ বাহুবলে একটি স্কুল ভবনের নির্মাণকাজ চলাকালেই ধসে পড়েছে দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি। এলাকাবাসীর অভিযোগ- নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার এবং ডিজাইন বহির্ভূত কাজের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। আতঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী এরই মধ্যে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার খাগাউড়া ২নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প (পিইডিপি-৪)-এর আওতায় ভবনটি বাস্তবায়ন করছে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ভবনের প্রথম তলার ছাদ ঢালাই শেষ হয়েছে আগেই। বর্তমানে দ্বিতীয় তলার ছাদের প্রস্তুতি চলছিল। এর মধ্যে গত ১৯ জুন দ্বিতীয় তলার সিঁড়ির ঢালাই করা হয়। কিন্তু মাত্র ছয় দিনের মাথায় বুধবার রাতে পুরো সিঁড়ি ধসে পড়ে। এ ছাড়া সিঁড়ির ওপরের অ্যাপ্রোচ ও পিলারের ঢালাইও খসে পড়ছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তাদের অভিযোগ- পুরো ভবনের নির্মাণকাজে অনিয়ম হচ্ছে এবং নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। ঘটনার পরদিন নির্মাণকাজে আসা শ্রমিকদের কাজে বাধা দেন গ্রামবাসী। এ সময় ঠিকাদারের লোকজনের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। গ্রামের বাসিন্দা ফাহিম আহমেদ বলেন, মাত্র কয়েক দিন আগে ঢালাই করা সিঁড়ি হঠাৎ ধসে পড়ে। সিঁড়ির ওপর তখন শ্রমিকরাও ছিলেন। তারা লাফ দিয়ে কোনো ভাবে রক্ষা পান। সামান্য সময়ের পার্থক্যে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।
স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি বিপুল সূত্রধর বলেন, ‘এই বিদ্যালয়ে আমাদের শিশুরা লেখাপড়া করে। ভবন যদি ঝুঁকিপূর্ণ হয়, তা হলে আমরা কীভাবে তাদের পাঠাব। চাই ভবনটি মজবুতভাবে নির্মাণ হোক এবং বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করে শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।’ ভবনের নির্মাণকাজের দায়িত্বে রয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স শেখ সেলিম। প্রতিষ্ঠানটির মালিক বাহুবল উপজেলা বিএনপির সভাপতি তুষার চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘সিঁড়িতে যতগুলো ধাপ থাকার কথা, তার একটি কম রয়েছে। এতে ডিজাইনবহির্ভূত হয়েছে। ভুল মানুষেরই হয়। এলজিইডি আমাকে এই সিঁড়ি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের নির্দেশনা দিয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নিযুক্ত সার্ভেয়ার উজ্জ্বল মণ্ডল বলেন, ‘নির্মাণকাজে অনিয়ম ও ডিজাইনবহির্ভূত হওয়ার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছিল। গত ২২ জুন ঠিকাদারকে চিঠি দিয়ে তা জানানো হয়েছে। এর পরই শুনলাম সিঁড়ি ধসে পড়েছে।’
Leave a Reply