সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০১:২০ পূর্বাহ্ন

শায়েস্তাগঞ্জে স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও সুরক্ষিত হয়নি বধ্যভূমি

শায়েস্তাগঞ্জে স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও সুরক্ষিত হয়নি বধ্যভূমি

শায়েস্তাগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ শায়েস্তাগঞ্জের একমাত্র বধ্যভূমি স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও সুরক্ষিত হয়নি। প্রতীকী কয়েকটি পিলার আর একটি নামফলক দেখলে বোঝা যায় এখানে একটি বধ্যভূমির অস্তিত্ব রয়েছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক গণহত্যার এক শোকাবহ স্মৃতিচিহ্ন অঙ্কিত হয়ে আছে শায়েস্তাগঞ্জ রেল জংশন সংলগ্ন এ বধ্যভূমিতে। তবে, এখানে এ পর্যন্ত নির্মিত হয়নি কোনো স্মৃতিস্তম্ভ। এতে নতুন প্রজন্মের কাছে অজানা থেকে যাচ্ছে বধ্যভূমির গুরুত্ব। স্থানীয় জনসাধারণ ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা এ বধ্যভূমি সুরক্ষা ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, চুনারুঘাট উপজেলার লালচাঁন্দ চা-বাগান থেকে ১১ জন চা শ্রমিককে ধরে এনে পাক হানাদার বাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করে এ বধ্যভূমিতে গণকবর দেয়। তাঁরা হলেন, রাজকুমার গোয়ালা, লাল সাধু, কৃষ্ণ বাউরী মেম্বার, দিপক বাউরী, মহাদেব বাউরী, অনু মিয়া, সুনীল বাউরী, নেপু বাউরী, রাজেন্দ্র রায়, গৌর রায় ও ভুবন বাউরী। এরমধ্যে শুধু অনু মিয়া মুসলমান ছিলেন।
শায়েস্তাগঞ্জ বধ্যভূমি রেললাইন সংলগ্ন হওয়ায় রেললাইন অতিক্রম করা ছাড়া সেখানে যাওয়ার কোনো রাস্তা ছিলনা। পৌরসভার ব্যবস্থাপনায় শায়েস্তাগঞ্জ-হবিগঞ্জ সড়ক থেকে বধ্যভূমিতে যাতায়াতের সুবিধার্থে একটি পাকা সড়ক নির্মাণ করা হলেও ঐ সড়কটি এখন সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বধ্যভূমিটি সুরক্ষার জন্য একজন মুক্তিযোদ্ধা তার নিজস্ব অর্থায়নে একটি ভবন নির্মাণ করে দিয়েছেন। সরকারি পরিকল্পনা থাকলেও এখনো বধ্যভূমিতে গড়ে ওঠেনি কোনো স্মৃতিস্তম্ভ। শুধুমাত্র কয়েকটা পাকা পিলার দিয়ে বধ্যভূমির সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে এখনো অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে বধ্যভূমিটি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান বলেন, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে এ বধ্যভূমি স্বীকৃতি পেয়েছে এবং গেজেটে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বধ্যভূমি একটি আবেগ, ইতিহাসের অংশ। এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমাদের সবার। বর্তমানে ঐ বধ্যভূমি রক্ষণাবেক্ষণ করছে পৌর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা গৌর প্রসাদ রায় বলেন, বধ্যভূমি সংরক্ষণ করা খুবই জরুরি। মুক্তিযুদ্ধে দেশের মানুষের আত্মাহুতি সম্পর্কে আগামী প্রজন্মকে জানাতে বধ্যভূমিকে সংরক্ষণ ও আধুনিকায়নের জন্য দাবি জানাই।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার পল্লব হোম দাস বলেন, বধ্যভূমি সংরক্ষণে এরই মধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এখানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে এ জায়গার মালিক বধ্যভূমির জন্য মালিকানা ছেড়ে দিয়েছেন। এখন বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি অনাপত্তি পত্র পেলেই বধ্যভূমিটির উন্নয়ন ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা যাবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2024 DailyBijoyerProtiddhoni
Design & Developed BY ThemesBazar.Com