শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
শ্রীমঙ্গলের আনারস যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তদবীরে পার পেয়ে যাবার অভিযোগ ধরা ছোঁয়ার বাহিরে লাখাইর যুবলীগ নেতা নোমান বিদ্যুৎস্পৃষ্টে গরু মৃত্যুর ঘটনায় কৃষককে ১ লাখ টাকা সহায়তা দিল পল্লী বিদ্যুৎ পৃথক অভিযানে ১২ লাখ টাকার চোরাইপণ্যসহ ও মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে বিজিবি লাখাইয়ে পৃথক অভিযানে খুনের মামলার আসামী সহ গ্রেফতার ৩ মাচায় গ্রীষ্মকালীন নানা রঙের তরমুজ চাষে কৃষক আবারও বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে ৪৪ জনকে পুশইন করল বিএসএফ হবিগঞ্জে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ মেলার উদ্বোধন বাহুবলের মহাশয় বাজারে দুঃসাহসিক চুরি ॥ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা নবীগঞ্জের চেয়ারম্যান রানাকে সিলেটে ‘গণপিটুনি’ পুলিশে দিল জনতা
চুনারুঘাটে ভুয়া বিল ভাউচার দিয়ে এতিমের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ

চুনারুঘাটে ভুয়া বিল ভাউচার দিয়ে এতিমের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ

চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ এতিমও ভুয়া হয়! শুনতে অবাক লাগলেও সত্য যে, এতিমের এমন ভুয়া তালিকা করে আত্মসাৎ করা হয়েছে লাখ লাখ টাকা। এতে বঞ্চিত হয়েছে প্রকৃত এতিমরা। এ ছাড়া নিয়মের তোয়াক্কা না করে অর্থ ছাড়ের নামে চলছে অনিয়মের মচ্ছব। এমন চিত্র উঠে এসেছে,চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের গাজীপুর দারুল উলুম এতিমখানায়। তবে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রবিন মিয়া অনিয়মের তদন্তপুর্বক ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। সমাজসেবা অধিদফতর নিবন্ধনকৃত এতিমখানায় ক্যাপিটেশন গ্রান্টে দেখা যায়, ২০২০ থেকে ২০২৫ অর্থবছরে এতিম নয়, এমন শিশুকে এতিম দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এতিমখানার সভাপতি ও সম্পাদক। এ ছাড়া ক্রয় কমিটির রেজুলেশন ছাড়াই লাখ লাখ টাকা বিল পরিশোধ করে এতিমের অর্থ নয়ছয় করা হয়েছে। ভুয়া বিল ভাউচার প্রধান করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করারও অভিযোগ আছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন সমাজসেবা অধিদফতর চুনারুঘাট উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের আওতায় গাজীপুর দারুল উলুম এতিমখানায় ২০২০-২০২৫ অর্থবছরে এতিম নয়, এমন শিশুকে এতিম দেখিয়ে অর্থ উত্তোলন করা হয়েছে। পর্যালোচনা করে দেখা যায়,এতিম শিশুর ভর্তি আবেদনপত্র, ভর্তির রেজিস্টার, জন্মনিবন্ধন সনদ, মৃত্যু সনদ যাচাইয়ে দেখা যায়, এতিম নয় এমন শিশুকে এতিম দেখিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। সরেজমিন গেলে দেখাযায়,এতিম নয় এমন অনেক ছাত্র সেখানে আছে।তা ছাড়া ক্যাপিটেশন গ্রান্টপ্রাপ্ত এতিমের পক্ষে প্রয়োজনীয় প্রমাণ এতিমখানা কর্তৃপক্ষ উপস্থাপন করতে পারেনি। উপজেলা সমাজসেবা অফিসে দাখিলকৃত বিল ভাউচার পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মাছের আড়তে মাংস ক্রয়,মাংস’র আড়তে মাছ ক্রয় সহ লাইব্রেরী থেকে লাকড়ি কেনাবেচার অসংখ্য ভাউচার। যা অক্ষরে অক্ষরে দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রমাণিত। ফলে এতিমখানায় ক্যাপিটেশন গ্রান্ট বরাদ্দ ও বণ্টন নীতিমালা (২০১৫-এর ক্রমিক নং ০২) অনুযায়ী এবং ১৯৪৪ সালের এতিমখানা ও বিধবা সনদ আইন (ধারা-২-এ ৩) অনুযায়ী নীতিমালা বহির্ভূতভাবে এতিমখানায় ক্যাপিটেশন গ্রান্ট উত্তোলন করায় সরকারের লাখ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, যা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়াসহ দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান এলাকাবাসী। উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আফজালুর রহমান বলেন, চুনারুঘাটে ক্যাপিটেশন গ্রান্ট বরাদ্দ এতিমখানা রয়েছে ৬ টি। এতিম শিশুদের প্রতিপালনের জন্য ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বরাদ্দ অনুযায়ী প্রত্যেক এতিমের মাথাপিছু মাসিক বরাদ্দ ২ হাজার টাকা। এর মধ্যে খাদ্য বাবদ ১ হাজার ৬০০ টাকা, পোশাক বাবদ ২০০ টাকা এবং ওষুধ ও অন্যান্য বাবদ ২০০ টাকা। শিশুদের ভুয়া এতিম দেখিয়ে বরাদ্দ করা অর্থ উত্তোলন করলে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত পুর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইন রয়েছে, ক্যাপিটেশন গ্রান্টের বিল পরিশোধের সময় ক্যাপিটেশন গ্রান্ট বরাদ্দ ও বণ্টন নীতিমালা ২০১৫-এর ক্রমিক নং (১৩, ১ ও ১৩.২) অনুযায়ী এতিমখানার তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃক বিল প্রস্তুতপূর্বক খরচের হিসাব এতিমখানার কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই করার জন্য উপস্থাপন এবং অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। এরপর কার্যনির্বাহী কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত রেজুলেশন খরচের বিলগুলো উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়, শহর সমাজসেবা কার্যালয় দাখিল করবে। ফলে ক্যাপিটেশন গ্রান্ট বরাদ্দ ও বণ্টন নীতিমালা ২০১৫-এর ব্যত্যয় ঘটেছে। গাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন,যেখানে ধর্মীয় শিক্ষা, আচার-আচরণ ও নৈতিকতার বন্ধন তৈরি হওয়ার কথা সেখানে, যদি দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়,তাহলে অচিরেই দমন করা প্রয়োজন বলে মনে করি। এ ব্যাপারে এতিমখানার সভাপতি আমির আলীকে ফোন করলে তিনি বলেন,বর্তমান সভাপতি হুমায়ুন চেয়ারম্যান জেলে থাকার কারণে তিনি, তার নামে টাকা উত্তোলন করছেন, আমি কোন দুর্নীতি ও অনিয়ম করিনি। গাজীপুর দারুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানার দাতা পরিবারের সদস্য ও গাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক সেক্রেটারি হিমু চৌধুরী বলেন,গত কয়েক বছর যাবত এতিমখানার সভাপতি আমির আলী এতিমের নামে টাকা উত্তোলন করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন, যা তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। গাজীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর খান বলেন, আমি আমেরিকা থাকায় আমীর আলী একাই মাদ্রাসার সভাপতি ও এতিমখানার অর্থ সম্পাদক/ কোষাধ্যক্ষ সেজে অর্থ আত্মসাৎ করেন। এতিমখানার মোতাওয়াল্লী ইদ্রিসুর রহমান মাসুক বলেন,আমি আমেরিকা থেকে আমির আলীকে মোবাইল ফোনে বলছি সঠিক হিসাব নিকাশ দেওয়ার জন্য কিন্তু সে দেয়নি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2024 DailyBijoyerProtiddhoni
Design & Developed BY ThemesBazar.Com