লাখাই প্রতিনিধি ॥ লাখাই উপজেলার হাওরাঞ্চলে এখন চলছে শেষ মুহুর্তের বোরো ধান কাটা। সঙ্গে চলছে ধান মাড়াই ও গরুর খাবার খড় শুকানোর কাজ। হাওরের বাতাসে দুলছে কিছু খড় ও পাকা ধানের সোনালি শীষ। এ দৃশ্য এখন লাখাই উপজেলার প্রতিটি হাওরে। কৃষকরা ধান কেটে মাঠেই সিদ্ধ করে রোদে শুকাতে শুরু করেছেন। ভারি বর্ষণ ও আগাম বন্যার শঙ্কা না থাকায় স্বস্তিতেই সোনার ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। এ বছর হাওরে ধানের ফলন ভালো হওয়ায় ও দাম ভালো থাকায় খুশি হাওর পাড়ের প্রতিটি কৃষক পরিবার। লাখাই উপজেলায় অর্ধশতাধিক হাওর রয়েছে। এসব হাওরে কৃষকরা আনন্দের সঙ্গে ধান কেটে মাড়াই ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সেই সঙ্গে কৃষাণীরাও বসে নেই। তারাও মনের আনন্দে ধান সিদ্ধ করে তা শুকিয়ে গোলায় তোলার কাজে সাহায্য করছেন। নিচু জমিতে শ্রমিকের পাশাপাশি সমতলে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনে কম খরচে ও দ্রুত ধান কাটতে পেরে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। অনেকে মাঠেই বিক্রি করছেন ধান। ধানের দর বেশি থাকায় উৎপাদন খরচের দ্বিগুণেরও বেশি দাম পাচ্ছেন বলে জানান কৃষকরা। লাখাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এ বছর ১১ হাজার ২০৮ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ করা হয়েছে। যা থেকে উৎপাদন প্রতি হেক্টরে ৫ টন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ পর্যন্ত ৮৫ থেকে ৯০ ভাগ জমির ধান কাটা হয়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে কৃষকরা এ বছর হাওরে স্বল্প জীবৎকালীন ও উচ্চফলনশীল জাতের ব্রি-ধান-৮৮, ব্রি-ধান-৯২, হাইব্রিড জাতের ধান রেকর্ড পরিমাণে চাষ করেছেন। তাতে ফলনও পেয়েছেন বেশি এবং বাজারদরও পাচ্ছেন ভালো। এদিকে বোরোর বাম্পার ফলনে মজুরি বেড়েছে ধান কাটা শ্রমিকদের। ধানের পাইকারদের দাবি, উচ্চফলনের ফলে কৃষক খুশি মনেই ভালো দামে ধান বিক্রি করছেন। কৃষি বিভাগ বলছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বোরো ফসলে রোগ ও পোকার আক্রমণ হয়নি। ফলে ফলনও হয়েছে ভালো। চলতি বৈশাখ শেষ হওয়ার আগেই হাওরের শতভাগ ধান কাটা শেষ হবে বলে আশা করছেন তারা।
Leave a Reply