নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জ উপজেলায় ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর হামলার ঘটনায় এক আসামিকে গ্রেফতার করতে গিয়ে এবার পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার (২৮ জুন) ভোরে গজনাইপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গজনাইপুর গ্রামে সংঘবদ্ধ হামলায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এছাড়াও পুলিশের কাছ থেকে গ্রেফতার হওয়া আসামিকে ছিনিয়ে নিয়েছে হামলাকারীরা। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- নবীগঞ্জ থানার কনস্টেবল শাহ ইমরান (২৭), মোজাম্মেল হক (২৫) ও পল্টন চন্দ্র দাশ (২৫)। তারা নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় পুলিশ এসল্ট মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সূত্রপাত ৩১ মে জনতার বাজার পশুর হাট উচ্ছেদ অভিযানে। ওইদিন জেলা প্রশাসনের নির্দেশে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিনের নেতৃত্বে পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও প্রায় ৭০ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য অভিযান চালান। অভিযানের সময় হাট কমিটির সদস্য ও স্থানীয় লোকজন বাধা দিয়ে এক পর্যায়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সন্দ্বীপ তালুকদারকে মারধর করেন। এ ঘটনার পরদিন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বাদী হয়ে ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে নবীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এই মামলারই এজাহারভুক্ত আসামি নজর উদ্দিনকে (৪০) শনিবার ভোররাতে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে নবীগঞ্জ থানা ও গোপলার বাজার তদন্ত কেন্দ্রের একদল পুলিশ দক্ষিণ গজনাইপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে। তবে গ্রেফতারের পরপরই আসামির সহযোগীরা স্থানীয় মসজিদের মাইক ব্যবহার করে ‘ডাকাত এসেছে’ বলে ঘোষণা দেয়। এতে দুই শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পুলিশের সদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয় এবং পুলিশের একটি ভ্যান ও দুটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়। ওই হামলার সময় নজর উদ্দিনকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুল হক। তিনি আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন এবং ঘটনার তদন্তের নির্দেশনা দেন। এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি শেখ মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর হামলার মামলায় এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেফতারের সময় সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চলছে। পুলিশ এসল্ট মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।’
Leave a Reply