স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আব্বাস উদ্দিনের পুত্র মালয়েশিয়ান প্রবাসী মোস্তাফিজুর রহমান টুটুলের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, কুমিল্লা জেলায় পাসপোর্ট আইনে টুটুলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। গত বছরের ২০ জুন সিলেটের সুবিদ বাজার এলাকা থেকে টুটুলকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে পাসপোর্ট, ২টি মোবাইল ফোন, ১টি নোটবুক, নগদ ৫ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা, মালয়েশিয়ান মূদ্রা ৬৪৫৪ রিংগিত, সিঙ্গাপুরী ডলার ১২৬, দেশী-বিদেশী বিভিন্ন এটিএম কার্ড চেক বই, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও মালয়েশিয়ান ২টি সীম জব্দ করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, টুটুল মালয়েশিয়া প্রবাসী হওয়ার দরুণ দীর্ঘদিন ধরে সেখানে অবস্থান করছে। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার জন্য সেখানে কয়েকটি ব্যাংকে ব্যক্তিগত ও কোম্পানীর নামে একাউন্ট পরিচালনা করতো। ওই একাউন্ডগুলোর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা অবৈধভাবে বাংলাদেশের বাহিরে পাচার করে থাকে বলে পুলিশের তদন্তে পাওয়া যায়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-৪ আসন (চুনারুঘাট-মাধবপুর উপজেলা) থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের ছত্রছায়ায় অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে টুটুল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মোস্তাফিজুর রহমান টুটুলকে সাউথ কাশিম নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নিয়োগ দেওয়ার জন্য ডিও লেটার দিয়েছিলেন সাবেক এমপি ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। এখানেই সীমাবদ্ধ নয়। চোরাকারবারী টুটুলের সাথে প্রমোদ ভ্রমনে গিয়েছিলেন ব্যারিস্টার সুমন ও তার সঙ্গীরা।
এলাকাবাসীর সাথে আলাপকালে জানা যায়, টুটুল পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতবাস এবং তার পাসপোর্ট ও ফোন প্রশাসন জব্দ করলেও এখন তিনি সমাজপতি হিসেবে পরিচিত। অনেক দিন প্রবাসে থাকার কারণে কেউ আগে তাকে না চিনলেও এখন তিনি নিজেকে দানবীর হিসেবে জাহির করছেন। এককালে যে ব্যক্তির প্রচুর অর্থাভাব ছিলো সেই ব্যক্তি শুধুমাত্র বিদেশে টাকা পাচার ও চোরাচালানের মাধ্যমে বিপুল বিত্তশালী হয়েছেন।
হুট করে এলাকায় দানবীর হয়ে উঠা টুটুলের কাজকর্ম নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু শুরু করেছে। এলাকাবাসী বিষয়টিকে স্থানীয় প্রশাসনকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
টুটুল ছাড়াও ব্যারিস্টার সুমনের আরেক অপকর্মের সহযোগী হলেন চুনারুঘাটের রায়হান আহমেদ। তিনি নিজেকে ব্যাংকার পরিচয় দিয়ে মানুষের সাথে প্রতারণা করে কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এক সময় গত সংসদ নির্বাচনে এলাকায় এসে সুমনের হয়ে কাজ করেন। পরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হন। কিন্তু বিপুল ভোটে পরাজিত হন। এরপরেও রায়হান, রোহেল আহমেদ,সুহাগ, সম্রাট আহমেদ ব্যারিস্টার সুমনের নাম ব্যবহার করে এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে মানুষকে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া যায়।
Leave a Reply