মাধবপুর প্রতিনিধি ॥ ‘শিখন-শেখানো প্রক্রিয়াটি অভিজ্ঞতাভিত্তিক’ অর্থাৎ শিক্ষার্থী বাস্তব অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখনের মধ্য দিয়ে যোগ্যতা অর্জনের পথে এগিয়ে যেতে মাধবপুরে ‘ক্ষুদে বিজ্ঞানী উৎসব’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার (৬ নভেম্বর) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মনতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ২৫টি বিদ্যালয় এ মেলায় স্টল বসিয়ে অংশগ্রহণ করে। উপজেলার সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলামের পরিকল্পনায় ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে আয়োজিত ক্ষুদে বিজ্ঞানী উৎসব ২০২৪ পালন করা হয়েছে। বিজ্ঞান বিষয়ক শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হাতে তৈরি বিজ্ঞান প্রজেক্ট, মডেল ও পোস্টার টাইপ উপকরণ এ মেলায় প্রদর্শিত হয়। বিভিন্ন ধরণের আকর্ষণীয় উপকরণগুলো শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে প্রবল উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। উপস্থিত দর্শনার্থীরা উপকরণগুলো দেখে দারুণ উচ্ছ্বসিত। আবুল হোসেন সবুজ নামে এক স্টলগুলো ঘুরে ঘুরে বললেন, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমন আয়োজন আমার জীবদ্দশায় কখনো দেখিনি। এমন চমৎকার আয়োজন শিশুদের বিজ্ঞানের ভয় দূর করতে সহায়তা করবে। এই ‘ক্ষুদে বিজ্ঞানী উৎসব’ এক ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।
এছাড়াও বিজ্ঞান বিষয়ক পাঠদানকারী শিক্ষকগণের আদর্শ পাঠদানের মাধ্যমে সেরা বিজ্ঞান শিক্ষক বাছাই, ৩য়-৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞান বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, ক্ষুদে বিজ্ঞানী টিম কর্তৃক বিজ্ঞান প্রজেক্ট উপস্থাপন প্রতিযোগিতা, সেরা বিজ্ঞান প্রজেক্ট প্রতিযোগিতা, হাতে তৈরি বিজ্ঞান প্রজেক্ট ও উপকরণ প্রদর্শন করার মাধ্যমে সেরা বিজ্ঞান বিদ্যালয় নির্বাচন করার মাধ্যমে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের তুমুল প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করেছে।
এর আগে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ধর্মঘর এলাকায় ক্ষুদে গণিতবিদ উৎসবটি মাধবপুর উপজেলায় ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
মনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থী ঈশিতা রাণী দাস তনুশ্রী এর মা শিখা রাণী দাস জানান, এমন উৎসবমূখর পরিবেশে এর আগে এমন অনুষ্ঠান আগে হয়নি। আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান প্রজেক্ট উপস্থাপন পর্বটি। সবার উপকরণগুলো খুবই আকর্ষণীয় ও মজার। শাহপুর দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির লামিয়া জাহান রোজার বাবা লিটন মিয়া বলেন, এমন উদ্ভাবনী উদ্যোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। শিশুর বিজ্ঞানের ভয় দূর করে হাতে কলমে শিখতে খুবই কার্যকর। তিনি সিলেট বিভাগে শ্রেষ্ঠ এটিইও রফিক সাহেবেকে ধন্যবাদও জানানা। সুরমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শাহনাজ বেগম বলেন, মেলায় অংশ গ্রহণের পূর্বে শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রতিযোগিতামূলক ভাবে শেখার আগ্রহ জাগে। স্কুলের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান বিষয়ে জানতে পেরেছে। তাছাড়া আজ ঈদের দিনের মতো আনন্দ মনে হচ্ছে। আমরা স্কুলে এমন সুন্দর সুন্দর উপকরণের মাধ্যমে শেখানোর চেষ্টা করি। দিনব্যাপী এই আয়োজনটি সমাপনী পর্বে ছিল বিজয়ী ও সেরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরষ্কার তুলে দেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম জাকিরুল হাসান, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা কবিরুল ইসলাম। সেরা বিজ্ঞান বিদ্যালয় নির্বাচিত হয়েছে বহরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
Leave a Reply