স্টাফ রিপোর্টার ॥ নারী চোরচক্রের সদস্যরা ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। মূলত এরা বড় কোনো অনুষ্ঠান বা আয়োজনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। পরে সেখানে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সু-কৌশলে নারীদের স্বর্ণালংকার, টাকাসহ বিভিন্ন সামগ্রী হাতিয়ে নেয়। এবার হবিগঞ্জ নয় সুদূর বরিশালে হানা দিয়েছে চোরচক্রের লাখাইয়ের ৩ নারী সদস্য।
গতকাল বুধবার বরিশালে স্মার্টকার্ড (ভোটার আইডি কার্ড) বিতরণকালে একাধিক নারীর স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনায় চোর চক্রের ১২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা সকলেই নারী এবং তাদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও লাখাই উপজেলার।
এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. অলিউল ইসলাম।
মামলার বরাতে তিনি জানান, উপজেলার বাগধা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বাগধা ইউনিয়নের ১ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চার হাজার ভোটারদের মাঝে জাতীয় পরিচয়পত্রের স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হয়। বিতরণের সময় নারীদের লাইনে দাঁড়ানো স্থানীয় খাজুরিয়া গ্রামের বাইজিদ তালুকদারের স্ত্রীর রুমা বেগমের স্বর্ণের চেইন চুরির সময় এক নারীকে আটক করা হয়। সেও ওই লাইনে বোরকা পরে দাঁড়িয়েছিল। আটকের পর জানা গেছে- সুমাইয়া আক্তার (৩৫) নামে ওই নারী স্থানীয় বাসিন্দা নন, সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাছির নগর উপজেলার ধরমন্ডল গ্রামের মিশু মিয়ার স্ত্রী। পরে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হলে আগৈলঝাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিল্টন মন্ডল ঘটনাস্থলে গিয়ে সুমাইকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারের পর সুমাইয়া আক্তার জানান, তারমতো আরও অনেকে বোরকা পরে লাইনে ও আশপাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আর তার দেয়া তথ্যানুযায়ী ওই এলাকা থেকে লাখাই উপজেলার মোরাপুর গ্রামের সুজন মিয়ার স্ত্রী কাকলি বেগম (২৩), এলাচ মিয়ার স্ত্রী দিনা আক্তার (২২), মুজাহিদ মিয়ার স্ত্রী রাফিয়া বেগম (৩০), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাছিরনগর উপজেলার ধরমন্ডল গ্রামের সোহরাব আলির স্ত্রী সেলিনা বেগম (৩৫), লিলু মিয়ার স্ত্রীর রুমা বেগম (৪৫), জহির মিয়ার স্ত্রী বানেছা বেগম (২৫), মোবারক মিয়ার স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার (২২), জহুর আলির স্ত্রী কেতারা বেগম (৪৮), আলাউদ্দিন শাহ’র স্ত্রী সালমা আক্তার (৩৪), জিতু মিয়ার স্ত্রী রোকসানা বেগম (৩০), আজিজ মিয়ার স্ত্রী আজিরন বেগম (৩০)সহ ১২জনকে আটক করা হয়। পরে তাদের থানায় নিয়ে আসা হয়।
এ ঘটনায় রুমা বেগম বাদী হয়ে আগৈলঝাড়া থানায় চুরির মামলা দায়ের করলে সেই মামলায় ১২ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. অলিউল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছে- তারা সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সদস্য। এরা এত চতুর চুরির সাথে সাথে চেইন অন্যত্র সরিয়ে দেয়। অনেক তল্লাশি করেও কারও কাছ থেকে খোয়া যাওয়া একটি চেইনও উদ্ধার করা যায়নি। তবে রুমা বেগমের মামলা দায়েরের সময় আমরা ৫টি চেইন চুরির কথা শুনেছিলাম কিন্তু গতকাল বিকেল পর্যন্ত ১৮টি চেইন চুরির বিষয় থানা পুলিশকে অবহিত করেছে স্থানীয়রা।