মাধবপুর প্রতিনিধি ॥ অনিয়ম ও দূর্নীতির বরপুত্র মাধবপুরের ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা তহসিলদার লোকমান হোসেন। মোট অংকের টাকার মাধ্যমে অনিয়মকে নিয়মে পরিনত করে ভূমির কাগজ সৃজন করা তার জন্য মামুলী ব্যাপার। একজনের নামজারি খতিয়ানের ভূমি অন্যজনকে ভূয়া পর্চা বানিয়ে দেওয়া, খাজনা পরিশোধে অতিরিক্ত টাকা আদায়, নামজারি আবেদনে মতামতে দখল দেখনো, পরবর্তিতে সেই দখলসহ প্রকৃত মালিকের সকল তথ্য গোপন করে প্রতিবেদন দাখিলসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা বেজুড়া মৌজা একটি জমি সংক্রান্ত ১৪৪ মামলার ভূমির ক্রেতা, মানজারির ও খাজনার তথ্য গোপন করে জবরদখলকারীর পক্ষে সাফাই গেয়ে প্রতিবেদন দিয়েছেন তহসিলদার লোকমান। কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বেজুড়া মৌজায় এস এ খতিয়ান নং ৪০৫ এবং দাগ নং ৫২৪৩ এর মালিক বেজুড়া গ্রামের মরহুম আনছর আলীর কাছ থেকে ১৯৬২ সালে ২৩১৭ নং দলিলে ওই গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলী ১২৯ শতক আমন ভূমি ক্রয় করেন। পরবর্তিতে মোহাম্মদ আলী হইতে তাহার ভাই কিফাত আলী ওই দাগে ৪৫শতক ভূমি নিজ নামে মাঠ জরিপে বিএস রেকর্ড করায়। যা বর্তমান খতিয়ান নং ৬৩৩,ক দাগ নং ১০২৩৭। কিফাত আলীর ওয়ারিশগন গত বছরের ২৫ মে ৫২১৭ নং দলিলে ¯’ানীয় মাসুদ খানের কাছে বিক্রি করে। ক্রেতা মাসুদ খান দলিল সমেত যাবতীয় কাগজপত্রাদি দিয়ে উক্ত ভূমির নামজারি আবেদন করেন। আবেদন নং ৩৬৯৭ (১-১) ২০২৩-২৪ এর প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা লোকমান হোসেন রেকর্ডপত্র ও সরজমিন তদন্ত করে গত ৭ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে নামজারির জন্য সুপারিশ প্রদান করেন। প্রাপ্ত সুপারিশের প্রেক্ষিতে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা নামজারি মোকদ্দমাটি মঞ্জুর করেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে উক্ত ভূমিটি প্রাণ আর এফ এল গ্রুপের প্রতিষ্ঠান পিডিএর জবর দখল করতে চাইলে তা নিয়ে দ্বন্দের সৃষ্টি হয়। জবর দখলকারীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে ভূমির মালিকপক্ষ কামরুজ্জামন খাঁন হবিগঞ্জ আদালতে ১৪৪ ধারা দরখাস্ত মামলা নং ৯৭/২৪ জারি করে। পুলিশ এসে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখে এবং তহসিলদারকে প্রতিবেদন পাঠাতে আদালত নির্দেশ দেন। সেই প্রতিবেদনে বর্তমান ক্রেতার রেজিষ্ট্রিকৃত দলিল, নাম খারিজ, খাজনা পরিশোধ ও দখল সংক্রান্ত সকল তথ্য গোপন করে জবরদখলকারী পিডিএল কোং পক্ষপাতিত্ব করে প্রতিবেদন দাখিল করে তহসিলদার। অভিযোগ রয়েছে ওই কোম্পানীর কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়ে ভূমির চর্তুপাশের লোকজন, স্থানীয় নিরপেক্ষ জনগন এবং কি বাদী পক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ না করেই টেবিলে বসে কোম্পানীর পক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করে। যা ০৭/১১/২০২৩ই তারিখে দাখিলকৃত প্রতিবেদনের সম্পূর্ণ উল্টো মন্তব্য করে ১৪৪ ধারা মামলার প্রতিবেদনে দিয়েছেন। সত্য গোপন করে পক্ষপাতিত্ব প্রতিবেদনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মূল মালিকরা। এই দুর্নীতিবাজ তহসিলদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গত ১১ নভেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন ভূক্তভোগী কামরুজামান খান। শুধু কামরুজ্জামান খান নয়, এরকম আরো অর্ধশত লোক তহসিলদার লোকমানের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দিশেহারা হয়ে ঘুরছে।
এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে লোকমান হোসেন জানান, ঘুষের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য গোপন করে পক্ষপাতিত্ব প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়ে তিনি বলেন এসব অভিযোগকারীদের মনগড়া।
Leave a Reply