বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
হবিগঞ্জে ভারতীয় গরু অনুপ্রবেশ নিয়ে শঙ্কায় খামারিরা মাধবপুরে দুনীর্তি প্রতিরোধ কমিটির বির্তক প্রতিযোগিতা বানিয়াচংয়ে সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা ॥ দেখার যেন কেউ নেই মাধবপুরে ভাবি ভাতিজিসহ তিনজনকে হত্যার দায়ে তাহেরের মৃত্যুদন্ড বাংলাদেশেও বন্যা ঘটতে পারে বিশেষজ্ঞদের শঙ্কা উজানে বন্যার প্রতিধ্বনি হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন আয়োজনে দুদকের গণশুনানি শায়েস্তাগঞ্জে ১১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রে ডাকাতি গিলাফ চড়ানোর মাধ্যমে হযরত শাহজালাল (রহঃ)-এর ওরস শুরু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হত্যা মামলার আসামি স্বামী-স্ত্রী হবিগঞ্জে গ্রেপ্তার নিউ লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা দু’জনের কারাদণ্ড
প্রশাসনের ফ্লেভার ব্যবহার করে শতকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতা জাকারিয়া চৌধুরীর বিরুদ্ধে

প্রশাসনের ফ্লেভার ব্যবহার করে শতকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতা জাকারিয়া চৌধুরীর বিরুদ্ধে

মাধবপুর প্রতিনিধি ॥ সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের শতকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ জাকারিয়া চৌধুরী নামে। সে মাধবপুরের জগদীশপুর গ্রামের আব্দুল্লাহ চৌধুরীর ছেলে। শুধু মাধবপুর নয় জাকারিয়া চৌধুরী (৪৭) বৃহত্তর সিলেট বিভাগে একটি আতংকের নাম। বিগত সময়ে মাধবপুরের বিএনপি রাজনীতির এক প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় থেকে রাজনৈতিক ও কর্মজীবন পরিচালিত করতেন। চলতি বছরের ৫ই আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা (সিআর-৭৬৮) এর আসামীও সে। মাধবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছেন। মামলায় তার পরিচয় উল্লেখ করা হয় জাকারিয়া চৌধুরী (৫২), সহ-সভাপতি, মাধবপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ, পিতা-আব্দুল্লাহ চৌধুরী, সাং-জগদীশপুর, মাধবপুর, জেলা-হবিগঞ্জ, বর্তমানে-এলিফ্যান্ট রোড ২১/বি, বাটা সিগন্যাল, ঢাকা। ওই মামলায় তিনি ৭১নং আসামী।
২০০১ সালে জগদীশপুর বাজারের চাঁদাবাজিসহ মাধবপুরে রাজনৈতিক দাঙ্গা সৃষ্টিতে অগ্রনী ভূমিকা পালন করতো বলে অভিযোগ আছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার সাথে সাথে বিএনপি’র ওই নেতার পেছন ছেড়ে দিয়ে প্রশাসনের ফ্লেভার ব্যবহার করতে শুরু করেন। তার কাছে অসহায় পুলিশ, সাংবাদিকসহ নানা পেশার লোকজন। সুকৌশলে ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সাংবাদিক, পুলিশ ও সমাজের বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে শতকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বীরদর্পে চলছে জাকারিয়া। পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে মামলা হামলাসহ দেখানো হয় ভয়ভীতি। ভয় দেখানো হয় পুলিশের কতিপয় উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে। এক সাথে দাওয়াত খাওয়াসহ প্রশাসনের কিছু ব্যক্তির সাথে তুলা ছবিগুলো হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। আর এ জাকারিয়া প্রতারণার মাধ্যমে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আদালতে ডজন খানেক মামলা চলমান আছে। মামলাগুলোতে বিবাদী শ্রেণীভূক্ত রয়েছে আলোচিত জাকারিয়া চৌধুরীসহ তার পরিবারের প্রায় সকল নারী ও পুরুষ সদস্যরা। শুধু আদালত মামলা করেই ক্ষান্ত নন ভুক্তভোগীরা। অনেকেই অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে লিখে ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ নাহিজ তার ২০ লক্ষ টাকা আত্মসাতের বিষয়ে পুলিশ সুপার বরারব অভিযোগ দিয়েছিলেন। তদন্তে যার সত্যতা পেয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন মাধবপুর-চুনারুঘাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নির্মলেন্দু চক্রবর্তী। শুধু সাংবাদিক নয় ভুট্টু মিয়া জানান, তার ১২ লক্ষ টাকা আজো আদায় করতে পারেনি জাকারিয়ার কাছ থেকে। থানায় অভিযোগ করে শালিস বিচারে রায় হলেও শালিস রায়কে অমান্য করে আজো টাকা দেয়নি। শুধু সাংবাদিক কিংবা সাধারণ জনগণই নয়। তার প্রতারণার জালের ফাঁদে খোদ পুলিশ সদস্যও আটকা পড়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলছে না পুলিশ সদস্য। জমি কেনা বেচার ব্যবসার নামে মোটা অংকের লাভের স্বপ্ন দেখিয়ে এক পুলিশ সদস্যের কাছ থেকেও টাকা হাতিয়ে নেয়ার গুঞ্জন রয়েছে জাকারিয়ার বিরুদ্ধে। আর এসব বিষয় মুখ খুলে প্রতিবাদ করতে গিয়ে আতংকে আছে অনেকেই। গত ১৮মার্চ আলোচিত সান্ াউল্লাহ চৌধুরী ও তার ভাই এ কে এম জাকারিয়া চৌধুরীসহ ৪ জনের নামে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেন। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি সিলেট শাখার পক্ষে এডভোকেট শেখ মোঃ আব্দুল আলীর প্রেরিত নোটিশে দেখা যায় ৬২ কোটি ৮৭ লক্ষ ৬৫ হাজার ৪১ টাকা ব্যাংক পাওনা। কিন্তু সেই পাওনা জাকারিয়া চৌধুরী ও সানাউল্ল্যা চৌধুরী পরিশোধ করে নাই। কিস্তি আকারে টাকা দেওয়ার কথা বলে গত ৩ মার্চ ব্যাংক বরারব ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা দেওয়ার একটি চেক প্রদান করেছিলেন। কিন্তু ওই একাউন্টেও টাকা ছিল না। যে কারণে তাদেরকে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করা হয়। খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে জাকারিয়া চৌধুরী, তার স্ত্রী ও ভাই বোনরা বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে নানা কৌশলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আর এ টাকা উদ্ধার করতে না পেরে ভূক্তভোগীরা আদালতে মামলা দায়ের করেছে। সিলেট অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে চেক ডিজঅনার সংক্রান্ত সিআর মামলা চলমান আছে। এ ব্যাপারে জাকারিয়া চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে আদালতের মামলাগুলো টাকা জমা দেওয়া শেষ হয়ে গেছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2024 DailyBijoyerProtiddhoni
Design & Developed BY ThemesBazar.Com