স্টাফ রিপোর্টার ॥ কোন ধরণের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভায় অবাধে চলছে পশু জবাই ও মাংস বিক্রি। নিয়ম অনুযায়ী পশু জবাই করার আগে গবাদি পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ থাকা জরুরি। নিয়োজিত ভেটেরিনারি সার্জন কিংবা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকের এই সনদ দেয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে এ কাজটি তদারকি করছেন পৌরসভার একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হলেও এখানে নেই কোন স্যানিটারি ইন্সপেক্টরও। স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে টিকাদান সুপারভাইজারকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কসাইরা কম দামে অসুস্থ গরু কিনে এনে ভোররাতে সকলের অগোচরে জবাই করে সেই গরুর মাংস বিক্রি করছেন। কোন ধরনের তদারকি না তাকায় সেই মাংসই কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদেরকে। এতে করে স্বাস্থ্য ঝুঁকির পাশাপাশি নানান সমস্যায় পড়ার আশঙ্কায় রয়েছেন তারা।
এছাড়াও প্রায়ই রোগাক্রান্ত গরু ও ফ্রিজে রাখা পুরনো মাংস বিক্রির অভিযোগ রয়েছে কসাইদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে একাধিকবার মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাদেরকে জরিমানা করা হলেও একই কাজ তারা পুনরাবৃত্তি করেই চলেছেন।
খাসির মাংস কিনতে আসা নুর উদ্দিন বলেন, মাংস কিনেছি। কিন্তু খাসি সুস্থ নাকি অসুস্থ তা জানি না। সাধারণ ক্রেতারা উচ্চমূল্য দিয়েও ভেজালমুক্ত মাংস কেনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
পৌর বাসিন্দা শফিক মিয়া বলেন, ভোররাতে সবার অগোচরে গরু-ছাগল ও ভেড়া জবাই হয়। ফলে আমরা কী সুস্থ নাকি অসুস্থ, পশুর মাংস টাকা দিয়ে কিনে খাচ্ছি তা কেউই আমরা জানি না। অতিরিক্ত দামে মাংস বিক্রি অভিযোগও করেন।
গবাদি পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার ছাড়পত্র চিকিৎসক দিয়েছেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে পৌরসভার আলিগঞ্জ বাজারের মাংস বিক্রেতা জলফু মিয়া তালুকদার বলেন, গরু জবাইয়ের পর পৌরসভার কর্মচারী নুরুজ আলী গরু প্রতি ১৫০ টাকা এবং ছাগল প্রতি ৫০ টাকা করে জবাইয়ের ফি নিয়ে যান। এখানে কোন ডাক্তার আসেন না। তাই স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই পশু জবাই ও মাংস বিক্রি করে আসছে সবাই। স্যানিটারি ইন্সপেক্টরও কখনো বাজারে আসেন না বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে পৌরসভার স্যানেটারি ইন্সপেক্টর (অতিরিক্ত দায়িত্ব) কামাল উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অসহযোগিতা মূলক আচরণ করেন।
একই বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পল্লব হোম দাস বলেন, পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলে দেখবো তারা বিগত সময়ে কি ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন। আমি সম্প্রতি দায়িত্ব নিয়েছি, বিষয়টি খতিয়ে দেখে সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
Leave a Reply