মাধবপুর প্রতিনিধি ॥ সকাল থেকে চা বাগানে কাজের মধ্যে যোগ দিয়েছেন। মাধবপুর উপজেলার ২টি চা বাগানসহ সিলেট বিভাগের ১২ বাগানের ১৫ হাজার শ্রমিক। তিন মাস ধরে বাগান বন্ধ থাকায় শ্রমিক পরিবারে তীব্র অভাব দেখা দেয়। তহবিল সংকটে গত তিন মাস ধরে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছিল না। পরে এনটিসি সদর দপ্তর বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ অনুমোদন করে গত সোমবার শ্রমিকদের দুই সপ্তাহের হাজিরা পরিশোধ করেছে। হাজিরা পেয়ে শ্রমিকরা গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে কাজে যোগ দেন। সিলেট বিভাগের সিলেট মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ এনটিসির লাক্কাতুরা, প্রেমনগর, বিজয়া, মাধবপুর মদনমোহনপুর, পাত্রখোলা, চাম্পারাই, চন্ডিছড়া, জগদীশপুর সাতছড়ি, নাসিমাবাদ, তেলিয়াপাড়া, জগদীশপুর, পারকুলসহ ১২টি বাগানে ১৫ হাজার নিয়িমিত শ্রমিক রয়েছে। ১৯৭৮ সালে ১২টি চা বাগান নিয়ে ন্যাশনাল টি কোম্পানি গঠিত হয়। ১২টি বাগানে দীর্ঘ সময় একটানা তিন মাস বন্ধ হয়নি। সরকার শেয়ার ৫১ শতাংশ এবং পাবলিক শেয়ার ৪৯ শতাংশ। ২০১০ সালে থেকে এনটিসি চা বাগানে লোকসান হচ্ছে। চায়ের উৎপাদন খরছ বাড়ায় নিলাম বাজারে চায়ের ভাল দর পাওয়া যায়নি। এনটিসি কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান শেখ কবির সহ অনেক পরিচালক পদত্যাগ করেন। এরপর এনটিসির ১২ বাগানে তহবিল সংকট দেখা দেয়। টাকার অভাবে শ্রমিকের বেতন সহ যাবতীয় ব্যয় বন্ধ হয়ে যায়। ফলে গত সেপ্টেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাগান বন্ধ থাকে। গত তিন মাস বাগানে কাজ না হওয়ায় ১৫ লাখ কেজি চা পাতা উৎপাদন করা যায়নি। বাগান খোলার পরও বাগান নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে চিন্তা দুর হয়নি। এ নিয়ে শ্রমিকদের ভাষ্য হচ্ছে, শ্রমিক বাগানে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করেন। তাদের মুজুরি সহ অন্যান্য সুবিধা খুব বেশি নয়। এরপরও তারা চান বাগান যেন চালু থাকে। কিন্তু কোম্পানি বছর বছর লোকসান করলে ফের বড় সমস্যায় পড়তে পারে। অতএব আগ থেকে বাগান উন্নয়নে চিন্তা করলে বাগান বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রামভজন কৈরি বলেন, এনটিসির ১২টি বাগানসহ দেশের সবকটি বাগানে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। বাগান ও শ্রমিকদের বাঁচিয়ে রাখতে হলে মালিকসহ সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। এনটিসির বাগান বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের অনেক কষ্ট হয়েছে। বাগানেও অনেক লোকসান হয়েছে।
Leave a Reply