স্টাফ রিপোর্টার ॥ হাওরাঞ্চলের তরুণদের মাদক ও মোবাইল আসক্তিসহ বিভিন্ন অপরাধ প্রবণতা থেকে দূরে রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন প্রবাসী ব্যবসায়ী ও গ্রামবাসীরা। এ লক্ষ্যে বানিয়াচঙ্গে আয়োজন করা হয়েছে তিন দিনব্যাপী মিনিবার নাইট ফুটবল টুর্ণামেন্ট। বিতরণ করা হয়েছে ফুটবল, জার্সিসহ খেলার বিভিন্ন সামগ্রী। এতে উৎফুল্ল হাওরপাড়ের কিশোর ও তরুণরা।
হবিগঞ্জের হাওরাঞ্চল খ্যাত পৃথিবীর বৃহত্তম গ্রাম বানিয়াচং। এক সময় নিয়মিত আয়োজন করা হতো ফুটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলা। কিন্তু বর্তমানে খেলাধুলা নেই বললেই চলে। এতে তরুণরা জড়িয়ে পড়ছে মোবাইল আসক্তি, মাদক সেবনসহ নানা অপরাধে। তরুণ সমাজকে এ পথ থেকে ফেরাতে হাওরাঞ্চলের নিজ এলাকায় খেলাধূলার উদ্যোগ নেন মালেশিয়ান প্রবাসী ব্যবসায়ী এ কে ফয়জুল ইসলাম। গ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে আয়োজন করেন তিন দিনব্যাপী মিনিবার নাইট ফুটবল টুর্ণামেন্টের। বৃহস্পতিবার রাতে কাটখাল মাঠে টুর্ণামেন্টের ফাইনাল খেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল হক খান। কাটখাল পঞ্চায়েতের সভাপতি কাজী লুৎফুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মানবজমিনের স্টাফ রিপোর্টার রাশেদ আহমদ খান। বক্তব্য রাখেন বানিয়াচং সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রবাস কুমার সিংহ, বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কবীর হোসেন, ইউপি সদস্য মোফাজ্জল হক ফরিদ, লন্ডন প্রবাসী শাহ উবায়দুর রহমান আবিদ, ডাঃ শাহীন মিয়া, কুয়েত প্রবাসী মণিলাল দাস, মিজানুর রহমান প্রমুখ। হাওরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৮টি টিম টুর্ণামেন্টে অংশগ্রহণ করে। গভীর রাত পর্যন্ত জমজমাট খেলাটি গ্রামাঞ্চলের শতশত দর্শক উপভোগ করেন। টুর্ণামেন্টে চ্যাম্পিয়ান হয় আলমপুর ফুটবল একাডেমী ও রানার্স আপ হয় কাটখাল ক্রীড়াচক্র। প্রথম পুরস্কার দেয়া হয় একটি অত্যাধুনিক বাইসাইকেল। এসব আয়োজনকে কেন্দ্র করে উৎসবমুখর হয়ে উঠে পুকড়া ইউনিয়ন এলাকা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল হক খান বলেন, বর্তমানে মোবাইলসহ বিভিন্ন আসক্তিতে জড়িয়ে পড়ছে তরুণরা। এর প্রধান কারণ হচ্ছে তারা খেলাধুলাসহ বিনোদন বঞ্চিত। তিনি বলেন, একজন খেলোয়াড় যে তার দেশকে উন্নত করতে পারে তার প্রমাণ হচ্ছে আফ্রিকা। আমরা চাই আমাদের তরুণরা খেলাধুলাসহ নিয়মিত শরীর চর্চা করে সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেড়ে উঠুক।
অনুষ্ঠানের আয়োজক মালেশিয়ান প্রবাসী ব্যবসায়ী এ কে ফয়জুল ইসলাম জানান, এলাকার প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছি। এক সময় গ্রামে গ্রামে বড় বড় ফুটবল খেলার আয়োজন হতো। হা ডু ডু, ভবিবলসহ নানা খেলাধুলায় তরুণরা ব্যস্ত থাকতো। এ কারণে তারা সকল ধরণের অপরাধ ও আসক্তি থেকে মুক্ত থাকতো। কিন্তু এখন আর এমন আয়োজন নাই। তাই বিপথে ঝুুকছে তরুণরা। এলাকার ভবিষ্যত তরুণ সমাজকে সুস্থ ও সুন্দর রাখতেই আমাদের এ ক্ষুদ্র আয়োজন। তরুণ সমাজকে অপরাধ মুক্ত রাখতে নিয়মিত এ ধরণের আয়োজন করা হবে।
Leave a Reply