বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০২:১০ পূর্বাহ্ন

আজ ভারতে জহুর আলীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার কথা

আজ ভারতে জহুর আলীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার কথা

নুরুল আমিন, চুনারুঘাট থেকে ॥ ভারতের ত্রিপুরাতে উদ্ধার হওয়া জহুর আলীকে কোথায় হত্যা করা হয়েছে তা নিয়ে চলছে চুল ছেড়া বিশ্লেষণ। অপরদিকে ৪ দিনেও জহুর আলীর মরদেহ ফেরত না আসায় তার বাড়িতে স্বজনদের আহাজারি চলছে। সীমান্ত সূত্র জানান, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় (ভারত সময়) মরদেহের ময়না তদন্ত ও ডিএনএ টেস্ট সম্পন্ন করা হবে। সোমবার সকালে চুনারুঘাটের গুইবিল সীমান্ত বরাবর ত্রিপুরা রাজ্যের গৌড়নগর এলাকা থেকে বাংলাদেশী বৃদ্ধ জহুর আলী (৫৫) এর মরদেহ নিয়ে নানা কথা নানা আলোচনা দুই বাংলায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ পত্র-পত্রিকায় ভিন্ন তথ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশন হচ্ছে যা ঘটনার মূল রহস্য থেকে যাচ্ছে অন্ধকারে। ত্রিপুরার কয়েকটি মিডিয়ার সূত্র থেকে জানা যায়, সোমবার ৬ জানুয়ারী সকালে গুইবিল সীমান্তের ১৯৬৮ নং মেইন পিলারের ৫ ও ৬নং সাব পিলারের কাছে ত্রিপুরার গৌড়নগর এলাকা থেকে বিএসএফ এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে খোয়াই থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। খোয়াই থানা পুলিশ মরদেহটি মর্গে পাঠায়। ফেইসবুকে বিষয়টি প্রকাশিত হলে তোলপাড় শুরু হয় এবং ত্রিপুরার খোয়াই হাসপাতালের মর্গে থাকা মরদেহটি বাংলাদেশী বৃদ্ধ জহুর আলীর বলে সনাক্ত করা হয়। এরপর চুনারুঘাট থানার এসআই দেলোয়ার হোসেন ফেইসবুকের সূত্র ধরে গাজীপুর ইউনিয়নের ডুলনা গ্রামে গিয়ে মৃত ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করেন। মৃত জহুর আলীর একমাত্র পুত্র অলি মিয়া জানান, তার বাবা ঢাকা বসুন্দরা সিটির সিটিএল কোম্পানীতে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি গত শনিবার বাড়িতে আসেন। রবিবার বিকালে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। সেই থেকে তিনি নিখোঁজ হন। তার বাবাকে কেউ খুন করেছে কিনা তা তিনি জানেন না। জহুর আলীর স্ত্রী সুফিয়া খাতুন বলেন, তার স্বামী যখন ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসেন তখন তার কাছে ১০/১২টি নতুন লুঙ্গি ছিলো। তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে লুঙ্গির ব্যবসা করবেন বলে জানান। ঢাকা থেকে আসার পর স্বামীর কাছে ১০/১১ হাজার টাকা একটি পলিথিনে মুড়ানো ছিলো বলে জানান তার স্ত্রী। সেই নতুন লুঙ্গি এবং টাকা সাথে নিয়ে তিনি রবিবার সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে বের হন। এরপর আর বাড়ি ফিরেননি। স্ত্রী সুফিয়া বলেন, প্রায় ১২টার সময় এলাকার একজন লোক তাকে বলেছে, তার স্বামী অজ্ঞান হয়ে বাড়ির কাছেই একটি পরিত্যক্ত ধানী জমিতে পড়ে রয়েছেন। সেই খবর পেয়ে তিনিসহ তার আত্মীয়রা ঘটনাস্থলে গিয়ে জহুর আলীকে পাননি তবে তার পায়ের প্লাস্টিকের নীল রঙের স্যান্ডেল, মাপলার ও মোবাইল ফোন পড়ে থাকতে দেখেন এবং যে পলিথিনে টাকা মুড়ানো ছিলো সেটাও ছেড়া অবস্থায় দেখতে পান তিনি। ঘটনাস্থলের অনতি দূরে সাদা রঙের আরও একজোড়া প্লাস্টিকের স্যান্ডেল উদ্ধার করা হয়। সেই সূত্র ধরে চুনারুঘাট থানার দারোগা দেলোয়ার হোসেন ডুলনা গ্রামে জহুর আলীর বাড়িতে আসেন এবং তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন। তিনি দুই জোড়া স্যান্ডেল, মোবাইল ফোন ও টাকা মুড়ানো সেই পলিথিন আলামত হিসেবে জব্দ করে থানায় নিয়ে আসেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে বিজিবি ৫৫ ব্যাটালিয়ানের কমান্ডিং অফিসার  লেঃ কর্নেল তানজিল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, বিজিবি ইতোমধ্যেই খোয়াই থানা পুলিশ ও বিএসএফ’র সাথে যোগাযোগ করেছে। সে দেশের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে মরদেহ ফেরত দেয়ার পদক্ষেপ নিবে তারা। তবে বিজিবি বলছে, জহুর আলী মানসিক রোগী ছিলেন। তা মানতে রাজি নন জহুর আলীর স্বজনরা।
জহুর আলী কি ভাবে সীমান্ত এলাকায় গেলেন, কি ভাবে কাঁটা তারের বেড়া অতিক্রম করলেন, কেনো গেলেন সেই রহস্য এখনও অন্ধকারে রয়ে গেছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে বা অধিকতর তদন্ত সমাপ্ত হলে আসল রহস্য জানা যাবে এমনটাই মনে করছেন চুনারুঘাট থানার ওসি নূর আলম। এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, মরদেহ ফেরত আনার বিষয়ে এখনও কেউ আবেদন করেন নি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2024 DailyBijoyerProtiddhoni
Design & Developed BY ThemesBazar.Com