মাধবপুর প্রতিনিধি ॥ মাধবপুরের মাহফুজা বেগম নামে এক বিধবার ঘরে পল্লী বিদ্যুতে আবেদন করেও মিলছে না বৈদ্যুতিক মিটারের সংযোগ। এতে চরম ভোগান্তিতে অন্ধকারে দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের। ঘরে শিশু বাচ্চাদের মোমবাতি জ্বালিয়ে পড়ালেখা করতে হচ্ছে। এতেও মোমবাতি কেনার আর্থিক সক্ষমতা নেই পরিবারটির। পার্শ্ববর্তী একটি মুরগির খামার থেকে লম্বা তার দিয়ে ফ্যান ও লাইট জ্বালানোর জন্য একটি আংশিক সংযোগ দেয়া হলেও সম্প্রতি সাংবাদিকদের সামনে তাদের বিভিন্ন অভাব অভিযোগ নিয়ে বক্তব্য দেওয়ায় সেটিও কেটে দেয়া হয়েছে। তাদের বাড়ি লোকালয় একটু দূরে হওয়ায় অন্ধকারে ভোগান্তির যেন শেষ নেই পরিবারটির। ভুক্তভোগী মাহফুজা বেগমের বাড়ি উপজেলার চৌমুহনী ইউপির কালিকাপুর গ্রামে। জানা যায়, ২০২২ সালে মাহফুজা বেগম বৈদ্যুতিক মিটারের জন্য আবেদন করেন। স্থানীয় পল্লী বিদ্যুতের দালালরা বড় অংকের ঘুষ দাবি করলে সেটি মেটাতে তিনি ব্যর্থ হলে বৈদ্যুতিক খুটিসহ সংযোগ মেলেনি। তখন তার স্বামীও মারা যায় ফলে আর্থিকভাবে আরো দুর্বল হয়ে যায় মাহফুজার। এভাবে বিদ্যুতবিহীন বছরের পর বছর কাটাতে হচ্ছে তাকে। যদিও মাধবপুর উপজেলাটি সরকারিভাবে শতভাগ বিদ্যুতায়িত হিসেবে ঘোষিত। এ ব্যাপারে বিভিন্ন জায়গায় এ নিয়ে মাহফুজা দাবি জানালেও কোন সুরাহা পাননি। মাহফুজা বেগম বলেন, বিদ্যুৎ পাওয়ার জন্য আমরা কোথায় না গিয়েছি কিন্তু বছরের পর বছর আমরা অন্ধকারে। বিদ্যুতবিহীন অন্ধকারে আমাদের খুব সমস্যা হয়। বাচ্চারা ভয় পায়। লেখাপড়া করতেও ভীষণ সমস্যা হয়। মাহফুজার দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া নাতনী তাজিন আক্তার জানান, আমাদের আশেপাশের বাড়িতে বিদ্যুতের আলো জ্বলে। কিন্তু আমাদের বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। আমরা সন্ধ্যায় আলো থাকতেই খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ফেলি। মোমবাতি কিনার সাধ্য আমাদের নেই। আমরা পল্লী বিদ্যুতের জিএম স্যারের কাছেও বিদ্যুৎ দেয়ার জন্য চিঠিও দিয়েছি। স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) পারভেজ ভুইয়া জানান, বিষয়টি আমরা সাংবাদিকদের মাধ্যমে জেনেছি। আমরা পুনরায় একটি নতুন আবেদন গ্রহণ করেছি। আমার ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে হলেও দ্রুত এটি সমাধানের চেষ্টা করব।
Leave a Reply