স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জের খোয়াই নদীর বিভিন্ন অংশের সাধারণ বালু মহাল ইজারা দেয়া হয়ে থাকে। যে সমস্থ এলাকা ইজারা দেয়া হয়, এর অধিকাংশ এলাকায়ই বালু নেই। তবে ইজারাদার ইজারাকৃত এলাকায় বালু না পেয়ে খোয়াই নদীর তীর কেটে মাটি উত্তোলন করে নিচ্ছেন। ফলে খোয়াই নদীর বাঁধ হুমকির মুখে। বর্ষা মৌসুমে খোয়াই পাড়ের বাসিন্দাদের নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়। চুনারুঘাট উপজেলার উবাহাটা খোয়াই অংশ ১৪৩১ বাংলা সনে ইজারা দেয়া হয়। কিন্তু উবাহাটা খোয়াই অংশে নদীতে বালু নেই। তারপরও ইজারাদাররা থেমে নেই। প্রতিদিন ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদীর বাঁধ থেকে মাটি কেটে তুলে নিচ্ছেন। ফলে খোয়াই বাঁধ চরম হুমকির মুখে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনকে ইজারা বাতিলের জন্য অবহিত করেছে উপজেলা প্রশাসন। এখন পর্যন্ত ওই বালু মহাল বন্ধের কোন উদ্যোগ বা ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
এদিকে উবাহাটা, শায়েস্থাগঞ্জ এলাকার ইজারা গ্রহিতারা প্রভাবশালী হওয়ার কারণে স্থানীয় জনসাধারণও এসবে প্রতিবাদ করতে পারছেন না।
ইজারা গ্রহিতারা হলেন- লস্করপুর এলাকার ফারুক মিয়া, উবাহাটা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জামাল হোসেন মেম্বার, শায়েস্থাগঞ্জ মহলুলসুনাম এলাকার সাইফুল ইসলাম, বিরামচর গ্রামের ফজল তালুকদার, কদমতলীর সোহেল ভান্ডারী, উলুকান্দি গ্রামের রাবার বাচ্ছু। এরা আইনের তোয়াক্কা না করেই কথিত ইজারার অজুহাতে খোয়াই নদীর তীর কেটে মাটি তুলে নেয়ায় খোয়াই বাঁধ হুমকির পথে।
এ ব্যাপারে অনেকেই বলছেন, বালু মহাল ইজারা দিয়ে রাজস্ব আদায় সরকারের লাভজনক হলেও জনজীবন বিপন্নের পথে। বিশেষ করে খোয়াই নদীর কয়েকটি অংশে বালু না থাকলেও বিগত দিনে এসব মহাল ইজারা দেয়ার ফলে ইজারাদাররা নদীতে বালু না পেয়ে নদীর বাঁধ কেটে মাটি তুলে নিচ্ছে। ফলে নদী রক্ষাবাঁধ চরম হুমকির সম্মুখীন। এ ব্যাপারে গত বছরের অক্টোবর মাসে জেলা রাজস্ব শাখার এক বৈঠকের সিদ্ধান্তানুযায়ী চুনারুঘাট সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরেজমিন তদন্তপূর্বক এক প্রতিবেদন জেলা প্রশাসন বরাবর প্রেরণ করেন। প্রতিবেদনে বলা হয় ‘খোয়াই নদী (উবাহাটা) বালু মহাল ১৪৩১ বাংলা সনে ইজারা প্রদান করা হলেও তাতে কোন বালু নেই। বালু না থাকলেও ইজারাদারগণ বাঁধের নিকট থেকে মাটি কেটে নিচ্ছেন। ফলে নদী রক্ষাবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যে কারণে বালু মহালটি বিলুপ্তি হওয়া প্রয়োজন। এ বিষয়ে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিন মিয়া’র সাথে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, অভিযান চলছে। পর্যায়ক্রমে সবগুলো এলাকায়ই পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতিমধ্যে অনেক স্থানেই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
Leave a Reply