নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের কালাভরপুর গ্রামে গত শুক্রবার রাতে আবারও হামলা,ভাংচুর,অগ্নি সংযোগের ঘটনায় জনপদে আতংক দেখা দিয়েছে। রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে সালামত খানের লোকজন বাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের তান্ডব চালায়। খবর পেয়ে এসময় আলমগীর খানের লোকজন প্রতিরোধ করতে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। মুখোমুখী সংঘর্ষে ২৫ জন আহত হয়।এর মধ্যে আলমগীর খানের গ্রুপের দুই সহোদর সবুজ মিয়া ও দিলাওর মিয়াসহ ৩ জনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় সিলেট ওসমানী হাসপাতালের আইসিইউতে নেয়া হয় মর্মে খবর পাওয়া গেছে। গতকাল রাতে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। একের এক হামলা মামলার ঘটনায় আতংকে পুরুষ শূণ্য গ্রামে উদ্ধেগ,উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। দুই গ্রুপের হামলা,পাল্টা হামলায় অস্থির হয়ে উঠেছে গ্রামের নিরীহ মানুষ। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী দুপুরে কালাভরপুর গ্রাম পরিদর্শন করেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়,উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের কালাভরপুর গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগ নেতা সালামত খান ও একই গোত্রের আলমগীর খানের মধ্যে র্দীঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। গত ১৪ মার্চ শুক্রবার রাতে সালামত খানের লোকজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে আলমগীর সমর্থিত মৃত আকল মিয়ার বাড়িতে হামলা,ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এসময় তাদের সাথে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা অংশ নেয়। হামলার সময়ে পাকা বাড়ির নিরাপত্তা বেষ্টনীর গ্রিলের পাশের দেয়াল এবং বাড়ির পেছনসহ চারদিকের দেয়াল শাবল দিয়ে ভেঙ্গে গৃহে প্রবেশ করে প্রতিটি কক্ষ ভেঙ্গে তনছন করে। তাদের হামলা থেকে নারী শিশুও রক্ষা পায়নি। লোপাট শেষে অগ্নি সংযোগ করে বাড়িটি জ্বালিয়ে দেয়। খবর পেয়ে আলমগীর খান ঘটনাস্থলে গেলে মুখোমুখী সংঘষ শুরু হয়। সংঘর্ষে জামাল খান, লিটন মিয়া, খুরশেদ মিয়া,রুমেল মিয়া,আলমগীর খান,নোবেল আহমেদ,নয়ন মিয়া,নানু মিয়া,অনু মিয়া,ফরাস মিয়া,কোকিল মিয়া,সাকির আলী,ফয়সাল,রোমান মিয়া,হোসাইন, মঈনউদ্দীন,ফয়সাল খান,সবুজ মিয়া, দেলাওর মিয়া, রুনা বেগম, আজিজা বেগম গুরুতর আহত হয়। আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এর পূর্বে সালামত খানের লোকজন জমি দখল,বৃক্ষনিধন ও বোরো মৌসুমের ফসল কর্তন ও বসতবাড়ি ভাংচুর করে। গ্রামবাসী সূত্রে জানাযায় যুবলীগ ক্যাডার মোহিত-হাদী-বদরুল-জাকির গংদের সাথে যুক্ত হয় বিএনপির দুলাল। গত প্রায় এক মাস যাবত এলাকায় অবাধে চলছে হামলা। মামলা,পাল্টা হামলা,ভাংচুর লুটপাট। দিনে রাতে ওই গ্রামে সশস্ত্র মহড়ায় আতংকিত এলাকার জনপদ। আলমগীর খানের সমর্থক ফরিদ মিয়া চৌধুরী, নোমান মিয়া, জাকির হোসেন, দেলাওর মিয়া প্রমুখের প্রায় ৩০ বিঘা জমির বোরো ধান প্রকাশ্য দিবালোকে কেটে নেয় সালামত বাহিনীর দুলাল-হাদি-মোহিদ-বদরুল গং। এছাড়াও, সালামত বাহিনীর লিটন মিয়ার নেতৃত্বে আলমগীর খানের প্রায় ৪ শতাধিক বৃক্ষ কেটে নেয়। ইতিমধ্যে সামাদ মিয়া ও সাঈদ মিয়া চৌধুরীর বসতবাড়ি ভেঙ্গে প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে। ভীতসন্ত্রস্ত হযে তারা প্রাণ রক্ষায় আত্মীয়ের বাড়ি আশ্রয় নেয়। বেপরোয়া সালামত বাহিনী একাধিকবার বসতবাড়িতে ঢুকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে ৭জন মহিলাকে রক্তাক্ত জখম করে। এসব ঘটনায় মামলা হলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি।এলাকার জনৈক মারুফ মিয়াসহ দায়িত্বশীল একাধিক সুত্র জানায়, বিগত একমাস ধরে হামলা,পাল্টা হামলা ও গুপ্ত হামলায় পরস্পর বিরোধী হাফ ডজন মামলা হলেও কেউই গ্রেফতার না হওয়ায় এলাকাবাসী সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
Leave a Reply