মাধবপুর প্রতিনিধি ॥ মাধবপুরের মনতলা এলাকার কিসমতপুর ও মনোহরপুর মৌজায় সাধারণ বালুর রশিদে অনবরত বিক্রি করছে মূল্যবান সিলিকা বালু। শুধুমাত্র ১৪৩২ বাংলা সনের জন্য সাধারণ বালুর মাত্র ২টি মৌজা ইজারা নিয়ে উপজেলার ১৫টি মৌজা থেকে বিক্রি করছে সিলিকা বালু । জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ২ মৌজার মহালটি ইজারা নিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি পারভেজ হোসাইন চৌধুরী। ৩৯ লক্ষ ৯৮ হাজার ৭শত ৫০ টাকায় সাধারণ বালু মহালটি ইজারা নিয়ে রসুলপুর, মনতলা ও মনতলা চৌমুহনী এই তিন টি কোয়ারির ১৫টি মৌজা থেকে বালু বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে ইজারাদারের বিরুদ্ধে। সাধারণ বালুর রশিদে সিলিকা বালু বিক্রি করায় সরকার প্রায় ৭ কোটি টাকার রাজস্ব হারাতে বসেছে। চলতি মাসের ৬ তারিখে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মজিবুল ইসলাম সেনাবাহিনী ও পুলিশ নিয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেছিল সিলিকা বালু মহালে। এতে ২/৩ দিন বন্ধ থাকলেও গত শুক্রবার ও শনিবার পুরোদমে গাড়ীভর্তি করে সিলিকা বালু বিক্রি করতে দেখা গেছে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে শুক্র ও শনিবারসহ সাপ্তাহিক বন্ধের দিনগুলো বেপরোয়া হয়ে যায় বালু খেকোরা। অন্যন্যদিনে সন্ধ্যার পর থেকে সারারাত চলে বালু উত্তোলন ও বিক্রয় । খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,কিসমতপুর ও মনোহরপুর নামের দুই মৌজার মহালের নাম করে মনতলা সিলিকা বালু কোয়ারীর বোরহানপুর, ভবানীপুর, দূর্লভপুর, আফজলপুর ও বহরা, চৌমুহনী কোয়ারীর কাশিমপুর, আলাবক্সপুর, মনোহরপুর, মঙ্গলপুর, গাজীপুর, আশ্রবপুরে এবং রসুলপুর বালু কোয়ারী এক্তিয়ারপুর, ভান্ডারুয়া, শাহজাহানপুর, সম্পদপুর, বড়ধলিয়া, সেলিমপুর ও রসুলপুর উত্তর মৌজাসহ আশপাশের এলাকায় অর্ধশতাধিক মেশিন বসিয়ে চলছে বালু উত্তোলন। খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৪৩০ বাংলা সনে উপজেলার রসুলপুর, মনতলা ও মনতলা চৌমুহনী বালু কোয়ারী ২৮.০৭.০০০০.০০৫.৬৬.০০২.২২(অংশ-০১)-৫৬৫ স্মারকের ইজারা গ্রহন করেছিলেন পারভেজ হোসাইন চৌধুরী। ওই তিন কোয়ারীর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল অর্থাৎ বাংলা সনের ৩০ শে চৈত্র। সিলিকা বালু কোয়ারীর মেয়াদ শেষ হলেও মনতলা ও চৌমুহনী মহালের সোনাই নদী ও রসুলপুর এলাকা থেকে হরদম চলছে ট্রাক, ট্রাক্টর যোগে বালু বিক্রি। আর এসব বালু পরিবহন হচ্ছে সাধারণ বালু মহালের রশিদে। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকায় পকেটভারী হচ্ছে স্থানীয় সিন্ডিকেটের। অপরদিকে অবিক্রিত মাধবপুরের ৩টি বালু মহাল বালু শুন্য হওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি বালু উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধে সোনাই নদী রাবার ড্যাম পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সভাপতি মোঃ ছায়েদুর রহমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরারব অভিযোগ করেন। কমলানগর গ্রামের জাহাঙ্গীর মিয়া স্থানীয় সেনা ক্যাম্পে এবং শাহজাহান মিয়া নামে এক ব্যক্তি জেলা প্রশাসক বরারব অভিযোগ করেন। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অবৈধ বালু উত্তোলন ও বিক্রি বন্ধে আবেদন করা হলেও প্রশাসনের জোড়ালো ভূমিকা না থাকায় আক্ষেপ প্রকাশ করছেন অভিযোগকারীরা। এ বিষয়ে বালু মহাল ইজারাদার মাধবপুর উপজেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি ও ইউ/পি চেয়ারম্যান পারভেজ হোসাইন চৌধুরী মোবাইলে সিলিকা বালু বিক্রি ও উত্তোলনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, সাধারণ মহাল থেকে বালু বিক্রি করা হচ্ছে।
Leave a Reply