নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জ উপজেলায় চলন্ত বাসে গার্মেন্টন্স কর্মীকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামী ধর্ষণ ঘটনার মূলহোতা বাসের হেলপার লিটন মিয়া (২৬)কে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার করেছে র্যাব-৯। সোমবার (১৬ জুন) দিবাগত রাত ১২টার দিকে র্যাব-৯, সিলেট সদর কোম্পানি ও শায়েস্তাগঞ্জ ক্যাম্পের যৌথ আভিযানে সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা থানাধীন জালালপুর এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। র্যাব-৯ এর মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে. এম. শহিদুল ইসলাম সোহাগ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এবং হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এ.এন.এম সাজেদুর রহমান গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। র্যাবের অভিযানে গ্রেফতার হওয়া বাসের হেলপার লিটন মিয়া (২৬) সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রশিদপুর গ্রামের নুরু মিয়ার ছেলে। এর আগে গ্রেফতার হওয়া বাস চালক ছাব্বির মিয়া (২৭) নবীগঞ্জ উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের এনাতাবাদ গ্রামের ফকির আলীর ছেলে। নবীগঞ্জ থানা পুলিশ জানায়, ধর্ষিতা তরুণী বানিয়াচং উপজেলার সারাংবাজার কামারখানি এলাকার বাসিন্দা হলেও বর্তমানে ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। রোববার (১৫ জুন) ঢাকা থেকে দাদার বাড়ি বানিয়াচংয়ে যাওয়ার জন্য বিলাশ পরিবহণের একটি বাসে ওঠে ঘুমিয়ে পড়েন ওই গার্মেন্টন্স কর্মী। বাস থেকে শায়েস্তাগঞ্জ নামার কথা থাকলেও ঘুমিয়ে থাকায় বাসটি শেরপুর ক্রস করে সিলেট অভিমুখে যাবার পথে তার ঘুম ভাংগে।
পরে মহাসড়কের অজ্ঞাত স্থান থেকে লোকজন তাকে নবীগঞ্জগামী মা এন্টারপ্রাইজ গাড়ি নং (সিলেট জ ১১০-০৩-৬৬)তে উঠিয়ে দেয়। ওই বাসের সকল যাত্রী মহা সড়কের আউশকান্দি নেমে যায়। রাত পৌনে ১০টায় নবীগঞ্জগামী বাসটি ভাঙ্গারপুল নামক স্থানে আসলে অন্ধকারাচ্ছন্ন স্থানে প্রথমে বাসের হেল্পার লিটন মিয়া পরে চালক ছাব্বির মিয়া উক্ত গার্মেন্টন্স কর্মীকে পালাক্রমে জোর পুর্বক ধষণ করে। রাত সাড়ে ১০টায় নবীগঞ্জ-শেরপুর সড়কের সালামতপুর পেট্রোল পাম্প এলাকায় ওই লোকাল বাসে মহিলার চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন বাসটিকে আটক করেন। ঘটনাস্থল দিয়ে যাবার সময় সেনাবাহিনীর টহলদল লোকজনের চিৎকার শুনে গাড়ি থামায়। এ সময় ওই গার্মেন্টন্স কর্মী গাড়ীর হেল্পার ও চালকের বিরোদ্ধে তাকে জোর পুর্বক ধর্ষণের ঘটনার বর্ণনা দেন। এ ঘটনায় গাড়ি চালক ছাব্বিরকে তাৎক্ষণিক আটক করে পুলিশে দেয়া হয়। সোমবার সকালে ঘটনাস্থল নবীগঞ্জের ছালামতপুর এলাকা পরিদর্শন করেন ও থানায় গ্রেফতারকৃত আসামীর সঙ্গে কথা বলেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এ.এন.এম সাজেদুর রহমান। পরে পুলিশ সুপার হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ধর্ষিতা গার্মেন্টন্স কর্মীর সঙ্গে দেখা করেন এবং সর্বাত্মক সহযোগীতার আশ্বাস দেন। ঘটনার পর পর সটকে পড়েন ধর্ষণের মূলহোতা হেলপার লিটন। গ্রেফতার এড়াতে লিটন আত্মগোপনে চলে যায়। অন্যদিকে লিটনকে গ্রেফতার করতে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
অভিযানে নবীগঞ্জ উপজেলায় চলন্ত বাসে গার্মেন্টন্স কর্মী ধর্ষণের ঘটনার ২৪ ঘন্টার ভিতরে দায়েরকৃত মামলার আসামী ধর্ষণকান্ডের মূলহোতা বাসের হেলপার লিটন মিয়াকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। মঙ্গলবার গ্রেফতারকৃত হেলপার লিটন মিয়াকে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।
Leave a Reply