নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জে শহরের ঐতিহ্যবাহী খালিক মঞ্জিলে মরহুম ছানু মিয়া চৌধুরীর বাসভবনে ভাঙচুর, লুটপাট চালিয়ে ঘরে তালাবদ্ধ রেখে বাসার কেয়ারটেকারকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিএনপি নেতা মিনাল আহমদ চৌধুরী ও সহোদর দিলাল আহমদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে বাসা দখল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভাড়াটিয়াকে হুমকির অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় চলছে। এ নিয়ে স্থানীয় সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ছানু মিয়া চৌধুরীর পরিবারের তরফে অভিযোগ দায়ের করেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী জোছনা চৌধুরী। মিনাল ও দিলাল গং তাকে হত্যা এবং দেশে ফিরলে গুমের হুমকি দিয়েছে মর্মে অভিযোগ করেন তিনি।
লিখিত অভিযোগ ও দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, শহরের হাসপাতাল সড়কস্থ খালিক মঞ্জিলে বেসরকারি ব্যাংক, ডায়াগনিস্ট সেন্টার, জিমনেশিয়ামসহ ১০-১৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। হাট নবীগঞ্জ মৌজায় ৬টি দাগে অবস্থিত খালিক মঞ্জিলে মোট জমির পরিমাণ ১০১ শতক। বাড়ি, বাগান, ভিটা, পুকুর, বাড়ি, দোকান ও গৃহের নামে উল্লেখিত পরিমাণ জমি চার সহোদর মদব্বির হোসেন চৌধুরী, আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, গোলাম রব্বানী চৌধুরী, ছানু মিয়া চৌধুরীর নামে গেজেটেড আরএস পর্চা মোতাবেক দখলভুক্ত মালিকানা রয়েছে। হিস্যাভিত্তিক মালিকানায় বাসবভন, মার্কেট এবং ভাড়াটিয়া চুক্তির ভিত্তিতে দোকান, ব্যাংক, ডায়াগনিস্ট সেন্টার ভাড়া দেয়া হয়েছে। চার পরিবারের দুই সহোদর আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, মরহুম ছানু মিয়া চৌধুরী যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন। অপর দুই সহোদর মরহুম মদব্বির হোসেন চৌধুরী ও গোলাম রব্বানীর সন্তানরাও যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে বসবাস করেন।
তাদের নিয়োজিত কেয়ারটেকার সমপরিমাণ মালিকানার ভিত্তিতে বাসা ও দোকান ভাড়া উত্তোলন করেন। সম্প্রতি দেশে গমন করেন বিএনপি নেতা মিনাল ও সহোদর দিলাল আহমদ চৌধুরী। ২১শে আগস্ট জোছনা চৌধুরীর মালিকানাধীন ভবনের তালা ভেঙে মালামাল লুটপাট, কেয়ারটেকার জিকু মিয়াকে তাড়িয়ে দেয়া, অপরাপর পরিবারের বাসবভনের বারান্দা ও সিটিংরুম ভাঙচুর এবং মার্কেটের ভাড়াটিয়াদের হুমকির ঘটনায় তোলপাড় চলছে। মিনাল চৌধুরী গোটা খালিক মঞ্জিলকে তার মরহুম পিতা মোদাব্বির হোসেন চৌধুরী ও আনোয়ার হোসেন চৌধুরীর মালিকানাধীন হিসেবে দাবি করেন। এ নিয়ে সেনাবাহিনীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তিনি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ কারও কথাকেই আমলে নিচ্ছে না মিনাল চৌধুরী। কাগজপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১০১ শতকের মালিকনার বিপরীতে জমির খাজনা, পৌরকর, বৈদ্যুতিক মিটার এবং ভাড়াটিয়া চুক্তিপত্র চার সহোদরের ওয়ারিশান মালিকানা ও দখলে পৃথকভাবেই পরিচালিত হচ্ছে। সার্বিক বিষয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী জোছনা চৌধুরী বলেন, খালিক মঞ্জিল, মার্কেটের দোকান, ডায়াগনিস্ট সেন্টার এবং ব্যাংক থেকে ভাড়া বাবদ টাকা বাদী মিনাল চৌধুরী জোরপূর্বক এককভাবে ভোগ করে আসছে। সে বিএনপি’র সক্রিয় কর্মী। বাসা, মার্কেট দখল করে রেখেছে। কেয়ারটেকার তার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আমি পৈতৃক সম্পদের সুরক্ষায় আইনি সহায়তা চাই। ওদিকে, সেনা সূত্র বলছে, অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসীর অভিযোগ এবং মালিকানাধীন কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সত্যতার ভিত্তিতে মিনাল, দিলাল কোনো চক্রই ছাড় পাবে না।
Leave a Reply