স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরে ঘন ঘন ডাকাতি ও চুরির ঘটনায় আতংক বিরাজ করছে শহরবাসীর মাঝে। তাদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না দোকানপাট ও বাসাবাড়ি। প্রতি নিয়তই ঘটছে চুরির ঘটনা। এ বিষয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কোন তৎপরতা না থাকায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্থদের। হঠাৎ করে ডাকাতি-চুরির বৃদ্ধি পাওয়ায় আতংকের মাঝে রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ সকল ধরনের মানুষ। আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা যতই ঘনিয়ে আসছে ব্যবসায়ীরা পাচ্ছেন। গতকাল শনিবার হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান ড. সুভাষ দেবের বাসায় ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। ডাকাতরা বাসায় রক্ষিত মূল্যবান গয়না ও নগদ অর্থ লুট করে নিয়ে যায়।
এছাড়াও হবিগঞ্জ শহরের বাণিজ্যিক এলাকার ঐতিহ্যবাহী আদি গোপাল মিষ্টান্ন ভান্ডারে অস্ত্র ঠেকিয়ে দূর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। ডাকাতরা দোকানে থাকা কর্মচারীদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৫ লাখ টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নেয়। এ ঘটনায় অসিম চন্দ্র দাশ নামে দোকান কর্মচারী আহত হয়েছে। গত শুক্রবার দিবাগত ভোররাতে আদি গোপাল মিষ্টান্ন ভান্ডারে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর কবিরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ও ব্যকসের সভাপতি শামছুল হুদা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
আদি গোপাল মিষ্টান্ন ভান্ডারের কর্মচারি অসিম দাশ জানান, ভোর রাতে ৬/৭ জন অস্ত্রধারী ডাকাত টিনের চাল কেটে দোকানে প্রবেশ করে। এসময় দোকানের ভিতর ঘুমিয়ে থাকা কর্মচারিদের অস্ত্র টেকিয়ে নগদ টাকা ও মূল্যবান জিনিসিপত্র লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাত দলের সবাই কালো পোষাক পরিহিত ছিল। প্রত্যেকের হাতে অস্ত্র ছিল।
দোকানের মালিক রূপক দাশ জানান, ক্যাশে দূর্গা পূজা উপলক্ষে কর্মচারিদের বেতন-বোনাসসহ নগদ কয়েক লাখ টাকা ছিল।
গতকাল শনিবার কর্মচারিদের বেতন বোনাস পরিশোধ করার কথা ছিল।
এদিকে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলার বাগান বাড়ীতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। ডাকাতরা ওই ঘরের গৃহকর্তী ও তার মেয়েদেরকে হাত-পা বেধে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা ও মালামাল নিয়ে যায়। এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। জানা যায়, গত বুধবার ভোররাতে গৃহকর্তা ছৈদ আলীর বাড়ী না থাকার সুযোগে ৮/১০ জনের একদল ডাকাত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে ওই বাড়ীতে ডাকাডাকি করে। এ সময় গৃহকর্তী সুমি আক্তার দরজা খুলতে অস্বীকার করলে তারা দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে। তাকে ও তার দুই কন্যাকে হাত পা বেধে ফেলে অস্ত্র দেখিয়ে জিম্মি করে। পরে ডাকাতরা ঘরে থাকা নগদ ২ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। যাবার সময় পাশের ঘরে থাকা ভাড়াটিয়া এক কিশোরকে পিটিয়ে আহত করে।
গত দুই তিন দিনের এমন ঘটনায় জনমনে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনেকেই বলছেন, অচিরেই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে। অচিরেই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
Leave a Reply