চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ চুনারুঘাট উপজেলার ১নং গাজীপুর ইউনিয়নের খেতামারা এলাকায় মোঃ আব্দাল মিয়া (৩৭) নামে এক ব্যবসায়ীকে মারধর করে মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। পরে স্থানীয় লোকজন আহত ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে প্রথমে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এ ঘটনায় আহত ব্যবসায়ী আব্দাল মিয়ার পিতা আব্দুল হাই বাদী হয়ে গত ১০ নভেম্বর হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপজেলার ১নং গাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ফজল মিয়া ও তার ছেলে ২নং ওয়ার্ড যুবদল নেতা রিপন মিয়াসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামীরা হলেন- আব্দুল মন্নান (৫০), আব্দুল আহাদ (৪০), জাহাঙ্গীর মিয়া (৪৮), শাকিল মিয়া (২৫), মধু মিয়া (৬৫), সানু মিয়া (৬৬), তানভীর (২২), মিজান (২২)।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বিএনপি নেতার বাড়ি সংলগ্ন বেশ কিছু কৃষিজমি আসামীরা দীর্ঘদিন যাবৎ জোরে বলে দখলে রাখে। সালিশের মাধ্যমে ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণের মধ্যস্থতায় আসামীদের দখলে থাকা ভূমি কিছুদিন পূর্বে পুনরুদ্ধার করা হয়। ওই চক্রের কয়েকজন লোকের বাড়ী সংলগ্ন স্থানে থাকায় আব্দাল মিয়ার জমি দখলমুক্ত করাকে কেন্দ্র করে উল্লেখিতদের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে গত ৯ নভেম্বর শনিবার সকালে আব্দাল মিয়া তার বন্ধু জিতু মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে আসামীর বাড়ী সংলগ্ন কৃষিজমি দেখাশোনা করার জন্য রওয়ানা দেন। আব্দাল মিয়া জিতু মিয়াকে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে সুমন মিয়ার বাড়ীর সামনে পৌঁছানো মাত্রই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আসামীগণ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আব্দাল মিয়াকে খুন করার জন্য তেড়ে আসে। এ সময় বিএনপি নেতা ফজল মিয়ার হুকুমে যুবদল নেতা রিপন মিয়ার নেতৃত্বে ৮/১০জন লোক আব্দাল মিয়ার ওপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে রিপন মিয়া দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আব্দালকে কোপাতে থাকে। এতে আব্দাল মিয়ার বাম হাতের কনুইয়ের নিম্নাংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ পরিস্থিতিতে আব্দাল মিয়া তার মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। পরে তার সহযোগীরা তার মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। আহতের পিতা মামলার বাদী আব্দুল হাই জানান, বিএনপি নেতা ফজল মিয়া ও তার ছেলে যুবদল নেতা রিপন মিয়ার নেতৃত্বে আমার ছেলেকে মারপিট করে তার মোটরসাইকেল ছিনিয়া নিয়ে যায়। তারা দলীয় প্রভাব খাটিয়ে আমিসহ একাধিক নিরীহ ব্যক্তির জমি দখল ও হামলা-মামলা করে নির্যাতন চালিয়ে আসছে। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকার সমাধারণ মানুষ। বর্তমানে আব্দাল মিয়া সিলেটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
Leave a Reply