স্টাফ রিপোর্টার ॥ চলতি বছর হবিগঞ্জ জেলায় ১ লাখ ২৩ হাজার ৭৩৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এ আবাদে ৭ লাখ ৮৬ হাজার ৫১৮ টনের বেশি ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। ধান থেকে চাল উৎপাদন হবে ৫ লাখ ২৪ হাজার ৩৪৫ টন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জেলার হাওরজুড়ে বোরো ধানের চারা রোপণ শেষ হয়েছে। বর্তমানে নন-হাওর এলাকাগুলোতে পুরোদমে বোরো ধানের চারা রোপণ করা হচ্ছে। হাওরের কৃষকরা জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর ভালোভাবে বোরো আবাদ সম্ভব হয়েছে। যে কারণে জানুয়ারির শুরুতেই হাওরে বোরো আবাদ পুরোপুরি শেষ করতে পেরেছেন কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে, এবার হবিগঞ্জ জেলায় ১ লাখ ২৩ হাজার ৭৩৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। তবে পুরোপুরি শেষ হলে আবাদ লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে যাবে। হবিগঞ্জে মূলত তিন ধরণের ধান আবাদ হয়ে থাকে। তার মধ্যে ৫০ হাজার ৮৮৫ হেক্টর হাইব্রিড, উফসী জাতের ৭২ হাজার ৮০১ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ধান আবাদ হবে ৫০ হেক্টর জমিতে। জেলার আজমিরীগঞ্জ, বানিয়াচং, লাখাই ও নবীগঞ্জ উপজেলার আংশিক হাওরাঞ্চল। হাওর ঘুরে দেখা যায়, মৌসুমের শুরুতে আবাদ করা ধানের চারা অনেকটা পরিপক্ক হয়ে উঠেছে। বাতাসে দুল খাচ্ছে সবুজ ধানগাছ। বাম্পার ফলনের আশায় হাওরজুড়ে জমি পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকরা। কেউ জমিতে সেচ দিচ্ছেন, কেউ আগাছা পরিস্কার করছেন আবার কেউ সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করছেন। হাওরের কৃষক সানু মিয়া বলেন, এবার আবহাওয়া বেশ অনুকূলে ছিল। বেশি শীত না পড়ায় শ্রমিক পাওয়া গেছে। সেই সাথে অন্য বছর অতি ঠান্ডার কারণে বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়, এবার সেটি হয়নি। বাকি সময় যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তাহলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন তিনি। কৃষক ফরিদ মিয়া বলেন, এ বছর আমরা ভালোভাবে বোরো আবাদ করতে পেরেছি। কোনো ধরণের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়নি। এছাড়া শুধুমাত্র বীজের দাম বৃদ্ধি ছাড়া অন্যকিছুতে খুব একটা খরচ বাড়েনি। বলেন, এক মাসেই ভালো চারা হয়েছে। যে কারণে কীটনাশক দিতে আসছি, যেন পোকা আক্রমণ না করে। এরপর যন্ত্রের মাধ্যমে আগাছা পরিস্কার করব। বাকি দিনগুলো যদি ভালোভাবে কাটে তাহলে বাম্পার ফলনের আশা। এখানে হবিগঞ্জ সদর, শায়েস্তাগঞ্জ, চুনারুঘাট, মাধবপুর ও বাহুবল উপজেলা নন-হাওর বেশি। এসব এলাকায় ব্যাপক পরিমাণে রোপা আমন চাষ হয়। রোপা আমন কাটার পর জমি প্রস্তুত করে বোরো আবাদে কিছুটা পিছিয়ে যায়। যদিও বর্তমানে সেখানে পুরোদমে চলছে বোরো আবাদ। কিছুদিনের মধ্যে এসব এলাকায়ও শতভাগ বোরো আবাদ শেষ হবে। হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আকতারুজ্জামান বলেন, আবহাওয়া বোরো আবাদের জন্য বেশ অনুকূলে রয়েছে। যে কারণে আমরা আশা করছি আমাদের যে লক্ষ্যমাত্রা তা ছাড়িয়ে যাবে। তবে এখনও যেহেতু ধান ঘরে তুলতে পুরো সময় রয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে কৃষক ভাইদের ঠিকমতো জমির পরিচর্যা করতে হবে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদেরকে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
Leave a Reply