বৃহস্পতিবার, ০৩ Jul ২০২৫, ০৫:৪৭ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ক্লিনিক্যাল ঘাটতি নিয়েই পড়াশোনা শেষ হয় হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজে

ক্লিনিক্যাল ঘাটতি নিয়েই পড়াশোনা শেষ হয় হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয় ২০১৬ সালে। কিন্তু এখনো স্থায়ী ক্যাম্পাস হয়নি। জোড়াতালি দিয়ে বিভিন্ন ভবনে চলছে হাসপাতালের শিক্ষা কার্যক্রম। পাঠদানের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষক নেই। শ্রেণিকক্ষ ও গবেষণাগার সংকটে ক্লিনিক্যাল (হাতে-কলমে) শিক্ষার ঘাটতি নিয়েই শেষ হচ্ছে পড়াশোনা।
চিকিৎসা-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, হাতে-কলমে শিক্ষার ঘাটতি নিয়ে শুধু বই পড়েই চিকিৎসক হয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। নিজস্ব ক্যাম্পাস ও কিছু ক্ষেত্রে আবাসন-সুবিধা না পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যেও হতাশা তৈরি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে মানুষের মানসম্মত চিকিৎসা পাওয়া নিয়ে শঙ্কা থেকে যাচ্ছে। দেশে মোট মেডিকেল কলেজ ১১০টি। এর মধ্যে সরকারি মেডিকেল কলেজ আছে ৩৭টি। যার মধ্যে নিজস্ব ভবন ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ছাড়া চলছে হবিগঞ্জ সরকারি মেডিকেল কলেজ।
বেসরকারি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নিজস্ব ভবনে মেডিকেল কলেজ, কলেজের আয়তন, শিক্ষার্থীর অনুপাতে শিক্ষক, ল্যাবরেটরি, লাইব্রেরি এ রকম অনেক বিষয়ে শর্ত আরোপ করা হয়। তবে সরকারি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার কোনো নীতিমালা বা শর্ত নেই। সরকারে থাকা ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের ইচ্ছায় এসব মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা ছাড়া সরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রমের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ শিক্ষাবিদরা জানান, অবকাঠামো স্থাপন, প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ না দিয়ে এভাবে মেডিকেল কলেজ চালানো কাঙ্খিত নয়। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় শিক্ষা দিতে না পারলে অর্ধশিক্ষিত চিকিৎসক তৈরি হবে। এতে আর যা-ই হোক, মানুষ মানসম্মত চিকিৎসা পাবে না। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ১ শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করা হবিগঞ্জ মেডিকেলে কলেজে আইটি ব্যাচে মোট শিক্ষার্থী ৫০৫ জন। ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার কয়েকটি কক্ষ নিয়ে হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম চলে। এ ছাড়া বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকসংকট চরমে। শিক্ষকদের ৮৩টি পদের মধ্যে শূন্য ৩৬টি।
সরেজমিনে দেখা যায়, কলেজের দাপ্তরিক কাজ চলে দ্বিতীয় তলায়। সেখানে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের দুটি পৃথক কক্ষ। বাকি সব শিক্ষকের জন্য একটি কক্ষ। দ্বিতীয় তলায় আংশিক ও তৃতীয় তলায় প্রায় তিন হাজার বর্গফুট জায়গা নিয়ে পাঁচটি শ্রেণিকক্ষ পাঠদান করা হচ্ছে। কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রথম দিকে ৫১ জনের ধারণ ক্ষমতার শ্রেণিকক্ষ থাকলেও এখন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় ১০০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছে। শিক্ষার্থী বাড়লেও শ্রেণিকক্ষের আয়তন বাড়েনি। কলেজ থেকে সদ্য এমবিবিএস পাস দুই ইন্টার্ন চিকিৎসক বলেন, ‘গাদাগাদি করে ক্লাস করতে হয়। হাতে-কলমে শিক্ষার ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না।’ শিক্ষক ও শ্রেণি কক্ষ সংকটের কথা নিশ্চিত করে হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাবেদ জিল্লুল বারী জানান, তিন মাস আগে তিনি যোগদানের পর উন্নয়নকাজ করে শ্রেণিকক্ষে ১০০ জনের বসার পরিবেশ করা হয়েছে। এখন সবচেয়ে প্রয়োজন একটি ক্যাম্পাস। পূর্ণাঙ্গ ক্যাম্পাস ছাড়া এভাবে মেডিকেল কলেজ চলতে পারে না বলেও জানান তিনি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2024 DailyBijoyerProtiddhoni
Design & Developed BY ThemesBazar.Com