বৃহস্পতিবার, ১০ Jul ২০২৫, ০৪:২০ অপরাহ্ন

চুনারুঘাটে যুবলীগের ত্রাস আমির আলীর বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর মামলা থাকলেও এখনও সে ধরাছোঁয়ার বাইরে

চুনারুঘাটে যুবলীগের ত্রাস আমির আলীর বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর মামলা থাকলেও এখনও সে ধরাছোঁয়ার বাইরে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশী ইউনিয়নের হরিণমারা গ্রামের আওয়ামী যুবলীগের ত্রাস আমির আলী এখনো আইনী ধরাছোঁয়ার বাইরে। নারী লিপ্সু, নারী নির্যাতনকারী, প্রতারক, সরকারী সম্পদ লুটকারী ও সরকারী কর্মকর্তাদের মারধর এবং বিগত সরকারের সময় হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্থানগরে বিএনপি’র মানববন্ধনে পাইপগান দিয়ে গুলিবর্ষণ করে তাউছ নামের এক কর্মীকে গুরুতর আহত করে সে।
২০১৫ সালে আমির আলী এক সময় ঢাকায় একাধিক গার্মেন্টস এ চাকুরী করতো। সেখান থেকে দুই সন্তানের এক জননীকে প্রলোভন দেখিয়ে তার বাড়ীতে নিয়ে এসে বিয়ে করে। কয়েকদিন অতিবাহিত হওয়ার পর ওই মহিলার কাছে যৌতুকের দাবী তুলে মারপিট করে। পরে মহিলাকে ডিভোর্স দিয়ে তাড়িয়ে দিলে এলাকায় শালিসের মাধ্যমে জরিমানা দিয়ে রক্ষা পায়।
একই বছর চুনারুঘাটের কালেঙ্গা সংরক্ষিত বনাঞ্চলে কালেঙ্গা বিটের হরিণমারা বিটের সেগুন বাগানে সংঘবদ্ধ চোরাইচক্র নিয়ে গাছ চুরির সময় বন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আটক করতে গেলে আমির আলীর সংঘবদ্ধ চক্র ধারালো অস্ত্র দিয়ে জাকির হোসেন নামের এক বন কর্মীকে গুরুতর জখম করে। এ ব্যাপারে বিট কর্মকর্তা রতন চন্দ্র বাদী হয়ে চুনারুঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৯৪/২০১৫ইং। উক্ত মামলায় আমির আলী চার্জসিটভুক্ত আসামী হয়েও বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ২০১৭ সালে আমির আলী চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ লাভ করে।
২০১৯ সালে আমির আলী ঢাকার সাভারে সাইয়াদা সুলতানা নামের এক গার্মেন্টস নারী কর্মীর সাথে পরকীয়া করে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ওই ধর্ষিতা সাভার থানায় মামলা দায়ের করলে সে গ্রেফতার হয়ে কিছুদিন হাজতবাস করে। পরে ওই মহিলাকে বিয়ে করে জেল থেকে মুক্তি পায়।
লম্পট আমির আলী ২০২২ সালে চুনারুঘাটের লক্ষ্মীপুর গ্রামে তানিয়া ইসলাম ইভা নামের এক যুবতীকে  বিয়ে করে। বিয়ের কয়েক দিন যেতে না যেতেই যৌতুকের জন্য ইভাকে প্রচন্ড মারপিট করে। এ ঘটনায় আমির আলীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন তানিয়া ইসলাম ইভা। মামলাটি এখনো বিচারাধীন। এছাড়া তানিয়া ইসলাম ইভা বাদী হয়ে পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০ এর ১৫ (ঙ)  ধারায় মামলা করলে চুনারুঘাট পুলিশ আমির আলীর বাড়ীর মালামাল জব্দ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। তার বিরুদ্ধে পারিবারিক ৩৫/২৪ মামলা আদালতে বিচারাধীন।
২০২৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারী মিরাশী ইউনিয়ন পরিষদে আমির আলীর বিরুদ্ধে আরো একটি অভিযোগ দায়ের করেন তানিয়া ইসলাম ইভা। ইউনিয়ন অফিস থেকে আমির আলীকে নোটিশ প্রদান করলে সে ওই নোটিশের কোন পাত্তাই দেয়নি। পরে ইউনিয়ন পরিষদ তানিয়া ইসলাম ইভাকে একটি প্রত্যায়নপত্র প্রদান করে। এরপর থেকে আমির আলী আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে।
আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন যুবলীগের সন্ত্রাসী ক্যাডার আমীর আলী সরকারের ন্যাক্কারজনক পতনের পরও মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে এখনো দাপটের সাথে চলাচল করছে। এমনকি নিজের অপরাধ অন্যের উপর চাপিয়ে দেয়ার হীন প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। যা এলাকাবাসীকে হতবাক করে দিয়েছে। সুচতুর আমীর আলী নিজের দায় অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে নিজেকে রক্ষার হীনপ্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১০ ডিসেম্বর জেলা শহরের শায়েস্থানগরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের মানববন্ধনে পাইপগান দিয়ে গুলি ছুড়ে তাউছ মিয়াকে গুরুতর জখম করলেও এখনো আমির আলীকে আইনের আওতায় আনা যায়নি।
দুর্ধর্ষ আমির আলীর নির্যাতন ও ভয়ে এলাকার মানুষ তটস্থ। তাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2024 DailyBijoyerProtiddhoni
Design & Developed BY ThemesBazar.Com