চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার জাবেদ,ফাহিম ও শরিফুলের। টাকা রোজগার করে পরিবারকে একটু শান্তি-সুখে রাখার স্বপ্ন নিয়ে তারা সৌদি গিয়েছিলো দালালের মাধ্যমে। কিন্তু প্রবাস তাদেরকে পথের ভিখারি বানিয়ে দিবে এটা তাদের কল্পনায়ও ছিলোনা। ৩ যুবক সৌদির একটি কক্ষে মানবেতর জীবন যাপন করছে বন্দি অবস্থায়। দিন যাচ্ছে অনাহারে অর্ধাহারে। উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের গনকীরপাড় গ্রামের মতিউর রহমান তার ছেলে জুনায়েদ আহম্মদ,ভাগিনা ফাহিম আহম্মেদ ও বন্ধুর ছেলে শরিফুল ইসলামকে উসমানপুর গ্রামের প্রবাসি দালাল আল আমিনের মাধ্যমে সৌদি আরব পাঠান গত ১৩ ফেব্রুয়ারী। জুনায়েদসহ ৩ যুবককে সৌদি আরব নেয় দালাল আল আমিন। আল আমিন উসমানপুর গ্রামের সামসু মিয়ার পুত্র। সে জুনায়েদদেরকে এয়ারপোর্টে কাজ দিবে বলে তিনজনের কাছ থেকে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। মতিউর চুনারুঘাট থানায় ১৩ মার্চ অভিযোগ দায়ের করে বলেন,তিনি আসামীদের প্রলোভনে পড়ে গনকীরপাড় গ্রামের আঃ জাহির মাখনের স্ত্রী আছমার ব্যাংক একাউন্টে প্রথমে দেড় লাখ টাকা প্রেরণ করেন। এরপর আল আমিন ও তার সহযোগী মাখন,আছমাকে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারী জুনায়েদসহ ৩ যুবক সৌদি আরব চলে যায়। সৌদির বিমানবন্দর থেকে জুনায়েদদের রিসিভ করে নিয়ে যায় দালাল আল আমিন। সেখানে একটি ছোট বাসায় তাদেরকে অন্যান্য প্রবাসিদের সাথে রাখা হয় এবং পাসপোর্ট -ভিসা আল আমিনের কব্জায় নিয়ে যায়। ছোট এই ঘরে এসি বিহীন কক্ষে তাদেরকে তালাবদ্ধ করে রাখে। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও তাদেরকে কোন কাজ না দিয়ে আল আমিন নানান ধরনের টালবাহানা শুরু করে। মতিউর বলেন,তার ছেলের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ করতে না পেরে তারা অজানা আতংকে ভোগেন। গত কয়েকদিন আগে তার ছেলে অন্যের মোবাইল থেকে ফোনে তাদের দুরাবস্থার কথা জানালে তিনি দেশীয় দালাল আছমা ও মাখনের স্বরণাপন্ন হন কিন্তু আছমা ও মাখন তাকে নানান ধরনের হুমকী দিয়ে বিদায় করে দেয়। বিষয়টি এলাকার মুরব্বীদের জানালে মুরব্বীরা তাকে থানার আশ্রয় নিতে পরামর্শ দেন। গত ১৩ মার্চ তিনি প্রবাসি দালাল আল আমিন,দেশীয় দালাল মাখন ও আছমাকে আসামী করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এ বিষয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
মতিউর রহমান বলেন,জমি জমা বিক্রি করে দালালের হাতে টাকা দিয়ে জমিজমা এবং সন্তান দুটোই তার হারাতে হয়েছে। তিনি তার ছেলে,ভাগিনা ও বন্ধুর সন্তান শরিফুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। দালালের হাতে তুলে দেয়া সাড়ে ১৩ লাখ টাকা ও সন্তানদেন ফেরত চান এবং দালালদের বিচার দাবী করেন মতিউর। এ বিষয়ে মাখন বলেন,তিনি মধ্যস্থতাকারী। টাকা পয়সার বিষয়ে সৌদি প্রবাসি আল আমিনই বলতে পারবে।
Leave a Reply