বিজয় ডেস্ক ॥ আসামে বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে বন্যা মোকাবিলার পূর্বপ্রস্তুতি পর্যালোচনা করেছেন রাজ্যের মুখ্য সচিব রবি কোটা। তিনি বলেছেন, এ ধরনের পরিস্থিতি সামাল দিতে সব সরকারি দপ্তর ও সংস্থাকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। গতকাল রোববার রাজ্যের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল শনিবার গুয়াহাটিতে বন্যার পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে একটি বৈঠক হয়। বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও কেন্দ্রীয় সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সেখানে ছিলেন। অন্য জেলার কর্মকর্তারা ভার্চুয়ালি এ বৈঠকে যুক্ত হন। বৈঠকে আসাম রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এএসডিএমএ) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জ্ঞানেন্দ্র ডি ত্রিপাঠি বন্যা মোকাবিলার জন্য রাজ্য ও জেলা পর্যায়ে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের একটি বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন। তিনি জানান, বন্যা প্রস্তুতি পুরোপুরি খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন অংশীদারের সঙ্গে সাতটি বিশেষ বৈঠক এবং সব জেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করা হয়েছে। মুখ্য সচিব রবি কোটা বলেন, বন্যার সময়ে কার্যকর ব্যবস্থাপনার জন্য সব দপ্তর ও সংস্থাকে এএসডিএমএয়ের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, জুনের শুরুতে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে প্রবেশ করতে পারে। এ সময় ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। বৈঠকে ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা জানান, তাঁদের মোট ১৮টি দলের মধ্যে ১৪টি আসামে মোতায়েন করা আছে। এই দলগুলো কাছাড়, বঙাইগাঁও, বরপেটা এবং জোরহাট জেলার জন্য প্রস্তুত থাকবে। এনডিআরএফের ১২তম ব্যাটালিয়নের দলগুলো ডিব্রুগড়, শিবসাগর, ধেমাজি ও শোণিতপুর জেলায় মোতায়েন করা হবে। এ ছাড়া, দমকল ও জরুরি পরিষেবার কর্মকর্তারা বলেছেন, আসন্ন বর্ষা মৌসুমের জন্য রাজ্যের ৫৮টি জায়গায় ৬৩৯ জন রাজ্য দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী (এসডিআরএফ) কর্মীর সঙ্গে ২৯৯টি সচল উদ্ধারকারী নৌকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এদিকে, আসামের বন্যার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদেরা। তাঁরা বলছেন, অব্যাহত বৃষ্টি ও আসাম থেকে আসা পানিতে দেশের প্রধান নদীগুলোর পানি বেড়ে বন্যা হতে পারে। ব্রহ্মপুত্র নদ আসাম হয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে কুড়িগ্রাম জেলা দিয়ে। এ ছাড়া বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের নদী সুরমা ও কুশিয়ারার জলধারাও আসাম হয়ে এসেছে। ফলে আসামের বন্যার পানি নামার সময় বাংলাদেশও প্লাবিত হয়। সেই পানি এবার বাংলাদেশেও বন্যা ঘটাতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরাও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
Leave a Reply