দেশের বন্যা কবলিত বেশিরভাগ জেলায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ফেনী, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট ও কক্সবাজারে ধীরে ধীরে কমছে পানি। তবে কুমিল্লা ও নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এই দুই জেলায় রোববার প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন এলাকা। এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ফেনীর শহর এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে। তবে গ্রামীণ অঞ্চল এখনও তলিয়ে আছে। যেসব এলাকা থেকে পানি নামছে সেখানে দৃশ্যমান হচ্ছে বন্যার ক্ষত।
এদিকে বন্যা কবলিত জেলাগুলোর প্রত্যন্ত এলাকায় খাবার, বিশুদ্ধ পানি, স্যালাইন ও ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সীমাহীন কষ্টে দিন কাটছে বানভাসিদের। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় এবং পর্যাপ্ত নৌযানের অভাবে দূর-দূরান্তে আটকে পড়া বানভাসিদের কাছে এসব সরঞ্জাম পৌঁছানো যাচ্ছে না।
অনেকেই মূল সড়কের পাশে ত্রাণ বিতরণ করে ছবি তুলে চলে যাচ্ছেন। সমন্বয়হীনতার কারণে শহরের আশপাশের কেউ কেউ কয়েক দফা ত্রাণ পেলেও অনেকে কিছুই পাচ্ছেন না। অনেক এলাকায় ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত নানা রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্গত এলাকায় ডাকাত ও সাপের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকার সুযোগে বাসাবাড়িতে ডাকাতি হচ্ছে। এতে রাত নামলে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, বন্যায় অনেকের বাড়িঘর ভেঙে গেছে, ঘরের আসবাবপত্র ভেসে গেছে, ভিজে নষ্ট হয়েছে অনেক সরঞ্জাম। এ কারণে ত্রাণের পাশাপাশি বাড়িঘর মেরামতে তাদের নগদ অর্থও প্রয়োজন। কবে নাগাদ বানভাসিরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন সেই অপেক্ষায় রয়েছেন।
দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. কামরুল ইসলাম বলেছেন, ভারতের ত্রিপুরা থেকে নেমে আসা ঢল ও কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় দেশের ১১ জেলায় ১০ লাখ ৪৭ হাজার ২৯ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তবে নতুন করে কোনো এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা নেই। তিনি বলেন, পানি নেমে যাওয়ার পর অনেক রোগের প্রাদুর্ভাব হতে থাকে। এ ব্যাপারে আমরা সতর্ক করেছি, প্রত্যেককে নিরাপদ পানি ব্যবহারের জন্য অনুরোধ করেছি।
Leave a Reply