চুনারুঘাট প্রতিনিধি॥ চুনারুঘাটে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আলাউদ্দিন (৪০) নামে এক কৃষককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন তার পিতা আব্দুর রউফ ওরফে হুরুন (৭০)। রবিবার (২৭ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার মিরাশি ইউনিয়নের রাজপথের মুখ লাটিয়ার তলি এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, পশ্চিম লালকেয়ার খাসটিলা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন ও তার পরিবারের সঙ্গে জলিলপুর গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে রহমত আলী গংদের দীর্ঘদিন ধরে খাস জমির চারা বাগান নিয়ে বিরোধ চলছিল। এই বিরোধ নিয়ে একাধিক মামলাও রয়েছে। হামলার সময় আলাউদ্দিন ও তার পিতা ভোলারজুম বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে রাজপথের মুখ এলাকায় ওঁৎ পেতে থাকা হামলাকারীরা তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় স্থানান্তর করা হলে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আলাউদ্দিন মারা যান। নিহতের স্ত্রী সাহেরা খাতুন জানান, আমার স্বামী একজন কৃষক ছিলেন। সংসারে তিন মেয়ে রয়েছে। মাত্র দুই দিন আগে প্রতিপক্ষের দায়ের করা হয়রানি মুলক মামলায় জামিনে মুক্ত হয়ে ঘরে ফিরেছিলেন। নিহতের ভাতিজা মো. জিহান বলেন, আমিও আহত নিজ চোখে দেখেছি প্রায় ৩০ জন হামলায় অংশ নেয়। তারা আমার দাদা ও চাচাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে ফেলে। তিনি আরও জানান, হামলাকারীদের মধ্যে জলিলপুর গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল গনি (৬০), তার ছেলে ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন মহরী (৩৭), জুয়েল মিয়া (৩২), রুবেল মিয়া (৩১), রাসেল (৩২), সাগর মিয়া (২৪), মৃত সফিক মিয়ার ছেলে সালাম মিয়া (৪০), যুবলীগ নেতা সিরাজ মিয়ার ছেলে ও বর্তমান ইউপি সদস্য বাচ্চু মহরী, সাবেক মেম্বার জলিলের ছেলে রহমত আলী (৩৫), ও কনা মিয়ার ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (৫০) রয়েছেন। নিহতের মেয়ে লিজা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, বাবার চিৎকার শুনে আমরা দৌড়ে যাই। গিয়ে দেখি বাবা ও দাদা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। যারা আমার বাবাকে মেরেছে, তাদের ফাঁসি চাই। চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর আলম জানান, মরদেহ ঢাকা থেকে এনে আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply