শনিবার, ২৬ Jul ২০২৫, ১০:০০ অপরাহ্ন

বন্ধের পথে মাধবপুরের নোয়াপাড়া চা বাগান, উৎকণ্ঠায় শ্রমিক

বন্ধের পথে মাধবপুরের নোয়াপাড়া চা বাগান, উৎকণ্ঠায় শ্রমিক

মাধবপুর প্রতিনিধি॥ মাধবপুর উপজেলার নোয়াপাড়া চা বাগানের জৌলুস আর নেই। এক সময়ের ব্যস্ত এই চা বাগানে এখন ভরা মৌসুমেও সুনসান নীরবতা। বাগান কর্তৃপক্ষকে প্রতিবছর লোকসান গুনতে হওয়ায় যে কোনো মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যেতে পারে ঐতিহ্যবাহী বাগানটি।
জানা গেছে, বাগান থেকে এখনও নিয়মিত সবুজ পাতা তুলছেন শ্রমিকরা। তবে বাগানের নিজস্ব প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ। বিপুল পরিমাণ গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় কারখানার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন সচল না থাকায় কারখানার মূল্যবান যন্ত্রপাতিতে জং ধরে গেছে। বাগানের এমন রুগ্নদশা আগে কখনও দেখেননি শ্রমিকরা। বাগানটি বন্ধ হওয়ার শঙ্কায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন চা শ্রমিক জানান, এক সময় দেশের প্রথম শ্রেণির বাগান হিসেবে নোয়াপাড়া চা বাগানের সুনাম ছিল। চায়ের দাম কমে যাওয়াসহ নানা কারণে কয়েক বছর ধরে ক্রমাগত লোকসান দিচ্ছে বাগান কর্তৃপক্ষ। বাগানের সুনাম ফিরিয়ে আনতে মালিকপক্ষ আন্তরিকভাবে চেষ্টা করলেও সফল হচ্ছে না। শ্রমিক-কর্মচারীদের কয়েক মাসের বেতন বকেয়া পড়েছে। বাগানের দুরবস্থা দেখে তারা চিন্তিত। বাগান কর্তৃপক্ষ ভালো না থাকলেও তারাও ভালো থাকতে পারবেন না। নোয়াপাড়া চা বাগানের শ্রমিকনেতা খেলু নায়েক বলেন, নোয়াপাড়া চা বাগানটি ব্রিটিশ আমলের। ঐতিহ্যবাহী এ বাগানে আটশর ওপর নিয়মিত চা শ্রমিক রয়েছেন। নিজস্ব প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানাও ছিল। সবুজ পাতা থেকে উৎপাদন হতো বিক্রয়যোগ্য চা পাতা। গত দুই বছর গ্যাস ও বিদ্যুতের বকেয়া টাকা পরিশোধ করতে না পারায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়। এ কারণে বর্তমানে বাগান থেকে সংগ্রহ করা কাঁচা চা পাতা অন্য বাগানে বিক্রি করা হয়। এটি শ্রমিকদের পীড়া দেয়। তিনি আরও বলেন, কারখানা চালু করলেই বাগানে চা প্রক্রিয়াজাত করা যেত। অর্থের অভাবে বাগান কর্তৃপক্ষ এটি পারছে না। ছয় মাস শ্রমিকের বেতন বকেয়া রয়েছে। কর্মচারীদের বেতন বন্ধ চার মাস ধরে। বেতন পেতে বাগানের শ্রমিকদের প্রায়ই আন্দোলন করতে হয়। দেখা যাবে এক সময় পুরো বাগান বন্ধ হয়ে গেছে। তখন শ্রমিকদের জীবনে অন্ধকার নেমে আসবে। মনি সাঁওতাল নামে এক চা শ্রমিক বলেন, মালিকপক্ষ অর্থ সংকটের অজুহাত দেখিয়ে কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। এতে বাগানে শ্রমিকের সমস্যা আরও বেড়ে চলেছে। শ্রমিকদের দাবি হচ্ছে, মালিকপক্ষ যেন কারখানা চালু করে বাগান করে এটি চালায়। কারণ বন্ধ মানে পুরো বাগান যে কোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। নোয়াপাড়া চা বাগানের উপব্যবস্থাপক সোহাগ মাহমুদ জানান, বাগানের নিজস্ব প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা বন্ধ থাকায় প্রতিবছর তাদের মোটা অঙ্কের টাকা লোকসান হচ্ছে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বাগানের কারখানাটি আবারও চালু করতে চেষ্টা করছেন তারা।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2024 DailyBijoyerProtiddhoni
Design & Developed BY ThemesBazar.Com