নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর এখনো চার হাজার ২৮৫টি পরিবারের ২০ হাজার ৮৪০ জন পানিবন্দি আছে। দু-এক দিনের মধ্যে তারাও পানিবন্দি থেকে মুক্ত হবে বলে প্রত্যাশা করছেন হবিগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক প্রভাংশু সোম মহান। বন্যাদুর্গত এলাকায় সরকারি ও বেসরকারি ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত আছে। তবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন এখন আর ত্রাণ প্রত্যাশা করছে না। ঘর মেরামত করে বাড়ি ফিরতে তাদের টিন আর উপকরণ সংগ্রহের জন্য প্রয়োজন নগদ টাকা। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা লোকজনের এই প্রত্যাশা। হবিগঞ্জ সদর উপজেলার জালালাবাদ গ্রামে নদীভাঙনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাধারণ মানুষ। অনেকেই মাঠের ফসল হারিয়েছে। বসতঘরে হয়ে পড়েছে ব্যবহার অনুপযোগী। টিউবওয়েলগুলো নিমজ্জিত থাকায় পানীয় জলের সংকট। এখন পানি কমলেও গ্রামের স্কুলেই বসবাস করছে ক্ষতিগ্রস্ত ৫০টি পরিবার।
গতকাল বুধবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে জালালবাদ, নোয়াগাও ও দুর্লভপুর গ্রামের আশ্রয়কেন্দ্রে গেলে ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, ‘পানি কমেছে কিন্তু কোথায় গিয়ে উঠব? পানিতে ঘর-বাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে। টাকা না পেলে ঘর মেরামত করব কী দিয়ে?’ জালালাবাদ গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আলফু মিয়া বলেন, ‘ঘর-বাড়ির পাশাপাশি জমির ফসলও নষ্ট হয়েছে। নগদ কোনো টাকা-পয়সা নেই। ঘর মেরামত করার টাকা পাব কোথায়। সরকার যদি টাকা ও টিন দেয় তাহলে ঘরটা মেরামত করতে পারব।’ একই গ্রামের রমিজ মিয়া বলেন, ‘অনেকেই ত্রাণ নিয়ে আসছে।
পানি কমলে তো আর কেউ আসবে না। তখন আমরা কী করব?’ দ্রুত পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ বিতরণ যেমন প্রয়োজন, তেমনি পুনর্বাসনও জরুরি। হবিগঞ্জ জেলার পাঁচটি উপজেলার ১৮ হাজার ২৪০ পরিবার পানিবন্দি হয়েছিল।। ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা ৭২ হাজার ৬০০ জন। পানিবন্দি মানুষদের মধ্যে বিতরণের জন্য এক হাজার ২৩৫ টন চাল মজুদ রয়েছে। বিতরণ করা হয়েছে ৩৪৫ টন চাল। দুই হাজার ১৯০ প্যাকেট শুকনা খাবার মজুদ ছিল এবং বিতরণ করা হয়েছে এক হাজার ৬৯০ প্যাকেট। নগদ ২৩ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে ৯ লাখ টাকা ইতোমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
Leave a Reply