চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ চুনারুঘাটে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পরিচয়ে দুই ভাইয়ের অত্যাচার দিন দিন বেড়েই চলেছে। তারা শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, তাদের দুই বোন মুক্তিযোদ্ধা কৌটায় সরকারি চাকুরি করছেন।
দীর্ঘ ষোল বছর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে চুনারুঘাট উপজেলার বালিয়াড়ি গ্রামের মরহুম ফিরোজ আহমেদের দুই ছেলে সোহেল (৪৫) ও রোহেল (৩৫) প্রভাব বিস্তার করে ওই এলাকার নিরীহ মানুষের উপর অত্যাচার করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনমজুর স্বামী-স্ত্রীকে লোহার রড় দিয়ে মারধোর করেছে দুই ভাই। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী দিনমজুর লিয়াকত মিয়া। এর আগেও কয়েকবার ওই দিনমজুরকে মারধোর করেছে তারা। কিন্তু এলাকায় দুই ভাইয়ের প্রভাব বিস্তার ও আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণে কোনো বিচার পায়নি লিয়াকত মিয়া।
মামলা ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, ওইদিন জমসর উল্লার ছেলে দিনমজুর লিয়াকত মিয়া অভিযুক্ত দুই ভাইয়ের চাচার জমিতে কাজ করছিল। তাদের চাচার দুইটি গরু ওই জমির পাশে খুঁটিতে বাঁধা ছিল। বাঁধ ছিঁড়ে অভিযুক্তদের জমিতে গরু দু’টি যাওয়ায় দুই ভাই বাড়ি থেকে বের হয়ে জমির কিনারায় এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ওই দিনমজুরকে। প্রতিবাদ করলে লোহার রড় দিয়ে মারধোর করে দিনমজুর লিয়াকত মিয়াকে। কাজ করা জমির পাশে লিয়াকত মিয়ার বাড়ি হওয়ায় মারধরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে তার স্ত্রীকেও মারধোর করে দুই ভাই। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করেন। অভিযুক্ত দুই ভাইয়ের সাথে তাদের আপন চাচার পারিবারিক বিরোধ চলে আসছে বেশ কিছুদিন ধরে। এর জের ধরেই বলির পাঠা হয়েছেন দিনমজুর লিয়াকত মিয়া।
আহত লিয়াকত মিয়া জানান, বিচার চেয়ে হবিগঞ্জ বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করার পরে দলবল নিয়ে অভিযুক্ত দুই ভাই দিনমজুর লিয়াকত মিয়ার বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার জন্য আসে এবং পেশি শক্তির বলে হুংকার দেয়, মামলা না তুললে রাস্তায় বের হতে দিবে না। বের হলে হাত-পা ভেঙে দিবে। তারা গ্রামের মাতব্বর হওয়ায়, লিয়াকত মিয়ার পরিবারকে একঘরে করে রাখারও হুমকি দেয় দুই ভাই সোহেল ও রোহেল। এমতাবস্থায় ওই দিনমজুর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
Leave a Reply