স্টাফ রিপোর্টার ॥ চুনারুঘাট উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন ছড়া থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার একটি চক্র সক্রীয় হয়ে উঠছে। প্রশাসন থেকে মাঝে মধ্যে অভিযান পরিচালনা করেও বালু খেকো চক্রের প্রধান হোতা আবু সায়েমকে নিয়ন্ত্রন করা যাচ্ছে না। স্থানীয়রা জানান আবু সায়েম শুধু অবৈধভাবে বালুই উত্তোলন করেনি এলাকার জন্য সে একজন ত্রাসও। আবু সায়েমের বালু চক্রের ৮/৯ জন সদস্য রয়েছে। এই চক্রটি শুধু বালু খেকোই নয় এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সহ মাদক পাচার, মাদক সেবন সহ নানা রকম অপরাধের সাথেও জড়িত। এব্যাপারে আবু সায়েম ও তার অপরাধ চক্রের বিরুদ্ধে চুনারুঘাট থানা পুলিশ একাধিক গুরুতর অপরাধ মামলার অভিযোগপত্র ও আদালতে দিয়েছে। সম্প্রতি এই চক্রটি পাইকপাড়া ইউনিয়নের কালা মানিক শাহ মাজারের ছড়া ও লস্করপুর ছড়ার বালু অবৈধভাবে উত্তোলন করছে। টমটম দিয়ে ওই বালু বহন করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কোন কোন ব্যাক্তিকে আবু সায়েম নিজেই মাসোয়ারা নিয়ে লিজ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। প্রতিমাসে ২০ হাজার টাকা করে একাধিক ব্যাক্তিকে সরকারী ছড়া লিজ দিয়েছে। পাইকপাড়া ইউনিয়নের মাঝিশাইল গ্রামের আব্দুল গনির পুত্র আবু সায়েম সরকারী বা চা বাগানের বালু খেকোই নয় সুতাং বাজার সহ বিভিন্ন এলাকায় নানা রকম নৈরাজ্যও সৃষ্টি করে আসছে। আবু সায়েমের বিরুদ্ধে চুনারুঘাট থানায় ২০২২ সালে সুতাং বাজারের এক ব্যবসায়ীকে সংঘবদ্ধ চক্র নিয়ে পথরোধ করে জোয়াহেরুল ইসলামের নগদ ৫০ হাজার টাকা,মোবাইল ফোন ও মোটর সাইকেল জোরপুর্বক নিয়ে যায়। জোয়াহেরুল ইসলামকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ফেলে যায়। এ ব্যাপারে মামলা হলে চুনারঘাট পুলিশ আবু সায়েম সহ তার সহযোগী ১০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে চার্জসিট দাখিল করে। হবিগঞ্জ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্টট আদালতে ৪৫১/২২ সিআর মামলা রয়েছে। এছাড়া চুনারুঘাট থানার এস আই ভূপেন্দ্র চন্দ্র বাদী হয়ে আবু সায়েম সহ ৬ জনের নামে ইয়াবা সেবন ও সংরক্ষনের অভিযোগ এনে ১০ ফ্রেব্রুয়ারী ২২ ইং তারিখ আরো একটি চার্জসিট দাখিল করেন। সুতাং বাজারস্থ বিসমিল্লাহ ফার্মেসীতে আবু সায়েমের নেতৃত্বে ১২/১৩ জনের একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্র হামলা চালিয়ে আসাদুল ইসলামকে আহত করে এবং ফার্মসীতে ভাংচুর করে টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ মামলায় ও তাদের বিরুদ্ধে চার্জসিট দেয় পুলিশ। জি আর মামলা নং ৩০০/১৮। এর আগে ১৯৯৪ সালে ভারতে গুড়োদুধ পাচার কালে হরষপুর পুলিশ ফাঁড়ির এস আই শহীদুল ইসলাম ভুইয়া আবু সায়েম ও তার অপর এক সহযোগীকে গুড়োদুধ সহ আটক করে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে আদালতে চার্জশিট প্রদান করেন। পাইকপাড়া ইউনিয়নের মাঝিশাইল গ্রামের আবু সায়েমের ভিন্নধর্মী অপরাধ বছরের পর বছর চালিয়ে গেলেও আইনী প্রক্রিয়ায় তা এখনো থামেনি। ফলে একের পর এক অপরাধ সংঘটিত করেও আইনের ফাকফোকড়ে রেহাই পেয়ে যাচ্ছে। নানা রকম অপরাধের সাথে জড়িত আবু সায়েম এখন ওই এলাকার ছড়াসমূহ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রী করার রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
Leave a Reply