স্টাফ রিপোর্টার ॥ কুশিয়ারা নদীর শাখা ‘বরাক’ নদী পারাপারে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার সাতটি গ্রামের মানুষের একমাত্র উপায় বাঁশের সাঁকো। দেশ স্বাধীনের পর থেকেই এই নদীতে একটি সেতুর জন্য অপেক্ষা করছেন তারা। তবে ৫৩ বছরেও দেখা মেলেনি সেই সেতুর। নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের সাতটি গ্রাম- ছোট শাখোয়া, পথেনগর, সর্দারপুর, নোয়াপাড়া, গুমগুমিয়া, পাঞ্জারাই ও করগাও। এই গ্রামগুলোতে প্রায় ২০ হাজার মানুষের বসবাস। স্বাধীনতার পর থেকেই তারা বরাক নদী পারাপারের বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করছেন। এর ওপর দিয়ে মরদেহ এবং অসুস্থ রোগী নিয়ে যাওয়া কষ্টকর। নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনধি ও রাজনৈতিক নেতারা একাধিকবার নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন করেননি। ফলে দুর্ভোগ ঘোচেনি তাদের। সরেজমিন দেখা যায়, করগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের পেছনে কুশিয়ারার শাখা বরাক নদীর অবস্থান। নদীর ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে স্কুল-কলেজ মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা ও স্থানীয়রা ঝুঁকি নিয়ে আসা-যাওয়া করছেন। সাঁকো দিয়ে আসা-যাওয়া করা কয়েকজন জানান, স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত অনেক জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতা এখানে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর তারা তা রক্ষা করতে আসেননি। ৮০ বছর বয়সি কাচা মিয়া বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে শাখা বরাক নদীর ওপর বাঁশের সাঁকো বানিয়ে চলাচল করছি। জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও এই সাঁকোই পথচলার ভরসা। কোনো সরকার একটি সেতু নির্মাণের প্রয়োজন মনে করেনি।’ একই এলাকার মজর আলী মিয়া বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত ওই সাতটি গ্রামে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। ব্রিজ নির্মাণের জন্য জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ধরণা দিয়েছি। কিন্তু তারা আমাদের দুর্ভোগ দূর করতে এগিয়ে আসেনি।’ প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক মো. রুবেল মিয়া বলেন, ‘এই সাঁকো দিয়ে স্কুল-কলেজের মাদ্রাসা ছাত্রছাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে যাওয়া আসা করেন। সম্প্রতি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) লোকজন ঘটনাস্থলে আসেন, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।’ করগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহিদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছি।’
এলজিইডির নবীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী জুনায়েদ আলম বলেন, ‘বরাক নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণের জন্য আবেদন করা হয়েছে। সেটি অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।’
Leave a Reply