শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ০১:২৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
কাকাইলছেও- রসুলপুর সড়ক বর্ষা মৌসুমে  চলাচলে চরম দুর্ভোগ মালয়েশিয়ায় আজমিরীগঞ্জের প্রবাসী মহিবুরের মৃত্যু শোকার্ত পরিবার সাবেক এমপি মজিদ খানের পুকুরপাড়ে বজ্রনিরোধক যন্ত্র শেখ হাসিনা ও মাহবুব আলীসহ ৫ জনের বিরোদ্ধে মামলার প্রস্তুতি অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে বাংলাদেশ হবিগঞ্জ বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনে পুলিশের ভুমিকা মাধবপুরে ৫২ মাদক কারবারি গ্রেফতার॥ মূলহোতারা এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে মাধবপুরের আজহার কিশোরগঞ্জে ৪০ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার ৩ হবিগঞ্জে সরকারী কলেজ শিক্ষকদের মতবিনিময় সভা জেলা কমিটি গঠন মাদক, বাল্য বিবাহ ও ইন্টানেটে আসক্তি প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের শপথ
জি-নাইন জাতের কলার উৎপাদন, ফসল চাষে সাফল্য

জি-নাইন জাতের কলার উৎপাদন, ফসল চাষে সাফল্য

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাহুবল উপজেলার ছিলামী গ্রামের বাসিন্দা চাষি মোঃ নিজাম উদ্দিন বাড়ির পাশে ৩০ শতক জমি আবাদ করেন। কি ধরণের ফসল চাষ করে লাভবান হওয়া যাবে, এ নিয়ে ভাবছিলেন তিনি। তাকে সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন উপজেলার দ্বিমুড়া কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মোঃ শামিমুল হক শামীম। তিনি নিজাম উদ্দিনকে পরামর্শ দিয়ে উন্নতজাতের জি-নাইন, অগ্নিশ্বর, সবরি কলার চারা সংগ্রহ করে দেন। সাথে সাথি ফসল হিসেবে পেঁপে ও বেগুনের চারা রোপণের কথা বলেন।
নিজাম উদ্দিন প্রথমে কলার চারা রোপণ করেন। পরে রোপণ করেন বেগুন ও পেঁপে চারা। রোপণের প্রায় চার মাসের মাথায় গাছে গাছে কলার ছড়ি এসেছে। শতাধিকের মধ্যে জি-নাইন জাতের কলা গাছ রয়েছে প্রায় ৬৫টি। বাকীগুলো অগ্নিশ্বর ও সবরি কলার গাছ। সাথে শতাধিক পেঁপে ও বেগুনে গাছ থেকেও ফসল উৎপাদন হচ্ছে।
নিরাপদ রাখতে ছড়িগুলোতে পরানো হয়েছে ফ্রুটব্যাগ। এতে করে কলাগুলো সতেজ থাকবে। পোকা আক্রমণ করতে পারবে না। ক্রেতা আকর্ষণ করবে। বিক্রিতে অধিক মূল্য পাওয়া যাবে। চাষাবাদে ওই চাষির প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিক্রি থেকে ২ লাখ  টাকা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিছু দিন পরই কলা বিক্রি করা যাবে।
সরেজমিন গেলে নিজাম উদ্দিন জানান, জি-নাইন কলা চাষ বাহুবলে প্রথম। এজন্য তিনি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন। গাছে গাছে কলার ছড়ি এসেছে। স্থানীয়রা তার নতুন জাতের কলা চাষ দেখে আগ্রহী হয়েছেন। তারাও এ জাতের কলা চাষ করতে প্রস্তুতি নিয়েছেন।
স্থানীয় চাষিরা জানান, এভাবে ফ্রুটব্যাগ পরিয়ে কলা চাষ হয় দেখা হয়নি। তাই নতুন জাতের কলা চাষ করতে প্রস্তুতি নিয়েছেন।
উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মোঃ শামিমুল হক শামীম বলেন, কলার এ জাতটি দেশে একদমই নতুন। এর মধ্যে জেলার বাহুবলে প্রথম চাষ হয়েছে। চাষিকে আমি চারা সংগ্রহ করে দিয়েছি। পরামর্শ প্রদান করছি। এখানের চাষ দেখে স্থানীয় চাষিদের মাঝে আগ্রহ দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, সাধারণত দেশের বাইরে নাশতার সঙ্গে যে কলাগুলো লোকজন খায়, এটি সেই জাতের কলা। পুরোপুরি রপ্তানিযোগ্য কলার জাতও এটি। এই জাতের কলার প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি উচ্চ ফলনশীল। বলা হয়ে থাকে, এই জাতের কলার একটি ছড়ি আড়াই মণ পর্যন্ত হতে পারে। প্রতিটি ছড়িতে প্রায় ২০০টি কলা পাওয়া যায়।
জি-নাইন জাতের কলা চাষ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই জাতের কলার চাষ প্রচলিত জাতের কলার মতোই। তবে টিস্যু কালচারের চারা হলে চারার বয়স নিশ্চিত হতে হবে। ল্যাবে চারার বয়স হয়ে গেলে জমিতে সেই গাছের আগেই ফলন চলে আসবে।
বাহুবল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল আওয়াল বলেন, জি-নাইন কলা বাহুবলে প্রথম চাষে সফলতা এসেছে। এতে স্থানীয় চাষিরা এ জাতের কলা চাষে আগ্রহী হয়েছেন। আমরা চাষিদের পাশে থেকে সার্বিকভাবে পরামর্শ প্রদান করছি।
তিনি বলেন, বাজারে কলা কিনতে গিয়ে কলার গায়ে দাগ দেখলে সাধারণত ক্রেতারা কিনতে চান না। এই দাগ বিটল পোকার আক্রমণের দাগ। কলা যখন কচি অবস্থায় থাকে, তখন এই পোকা ত্বক কুরে কুরে খায়। কলা পরিপক্ক হওয়ার পর সেটি কালো দাগ ধারণ করে। এটির স্বাস্থ্যগত কোনো ঝুঁকি নেই। কিন্তু দেখতে খারাপ হওয়ায় চাষিরা দাম কম পান। এই পরিস্থিতি থেকে কলাকে রক্ষায় ব্যাগিং করা যেতে পারে। মূলত কলা মোচায় থাকা অবস্থায় এই ব্যাগ পরাতে হয়। এতে বাড়তি কোনো কীটনাশক-ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হয় না। ব্যাগিং করা কলা একেবারেই চকচকে হয়। এই কলার বাজারমূল্য ভালো পাওয়া যায়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2024 DailyBijoyerProtiddhoni
Design & Developed BY ThemesBazar.Com