স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘আজমিরীগঞ্জে সরকারি রাস্তায় মাটি ভরাট করে দখলের চেষ্টা আ,লীগ নেতা প্রণবের’ শিরোনামে দৈনিক বিজয়ের প্রতিধ্বনি পত্রিকায় উল্লেখিত শিরোনামে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সহ সকলেরই নজর কাড়ে। এরই প্রেক্ষিতে গতকাল শনিবার সকাল ৯টায় ঘটনাস্থলে লোক পাঠিয়ে সরকারি রাস্তায় মাটি ভরাটের কাজে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মুজিবুল ইসলাম। এরপর সারাদিন কাজ বন্ধ রাখে সংশ্লিষ্টরা। তবে কাজ বন্ধ রাখলেও সরকারি রাস্তা থেকে মাটি অপসারণের কাজ শুরু করা হয়নি। অপরদিকে, ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রণব বণিক ও ভাতিজা গৌতম বণিক মাটি ভরাটকৃত সরকারি রাস্তার দখল বজায় রাখতে দিনভর বিভিন্ন দপ্তরে দৌঁড়ঝাঁপসহ নানা নেতৃবৃন্দের দ্বারস্থ হতে দেখা যায়।
উল্লেখ্য, আজমিরীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাজারের বিপ্লব মেডিকেল হলের স্বত্বাধিকারী প্রণব বণিক (৫২) সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সরকারি রাস্তায় মাটিভরাট করে রাস্তা দখলের চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে ১নং সদর ইউনিয়নের বিরাট কালাইনজুরা হাওরের কৃষিজমির মাটি কেটে ডায়নাভর্তি করে এলাকার বিজয়া সরকারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তার পাশে স্তুপ করে রাখছে। পরবর্তীতে ১০ থেকে ১২ জন শ্রমিক লাগিয়ে ভোর থেকে উল্লেখিত সরকারি রাস্তায় মাটিভরাটের কাজ অব্যাহত রেখেছে। সে এলাকার সরাপনগর (গঞ্জেরহাটি) গ্রামের মৃত নীলমোহন বণিকের পুত্র। তার সহযোগীতায় রয়েছে বাজারের একটি স্বর্ণ শিল্পালয়ের মালিক ও বিদেশ ফেরৎ ভাতিজা গৌতম বণিক (২৫)। খবর পেয়ে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার পর পর দু’দিন সদরের উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা মোঃ আবু কালাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সরকারি রাস্তায় মাটিভরাট করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। কিন্তু উক্ত নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে উক্ত সরকারি রাস্তায় মাটিভরাট অব্যাহত রেখেছে সংশ্লিষ্টরা। তারা জানায়, তারা তাদের ভিটায় বসতঘর নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। বসতঘর থেকে নিজ ভিটার উপর দিয়ে মূল রাস্তায় আসার সুযোগ থাকলেও সংলগ্ন সরকারি রাস্তায় মাটিভরাট করে নিজ দখলে রাখার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। ওই গ্রামের বাসিন্দা এক হোমিও চিকিৎসক জানায়, এ নিয়ে পঞ্চায়েতের একটি সভা অনুষ্টিত হয়। প্রণব ও গৌতমকে সরকারি রাস্তায় মাটিভরাটের ব্যাপারে তার স্বজনরা সায় দেয়। আমি সহ উপস্থিত অনেকেই এর প্রতিবাদ করি। কিন্তু প্রতিবাদ উপেক্ষা করে প্রভাব খাটিয়ে তারা মাটিভরাট করে সরকারি রাস্তা দখলের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। কারণ ওই রাস্তায় মাটিভরাট করা হলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে। এতে করে মশা মাছি সহ বিভিন্ন কীটপতঙ্গের উপদ্রব দেখা দেবে। গ্রামের লোকজনের মাঝে রোগবালাই দেখা দেবে। এ ছাড়াও ছিঁটকে চোরের উপদ্রব বেড়ে যাবে। একই গ্রামের বাসিন্দা ও বাজারের অপর ব্যবসায়ী জানায়, সরাপনগর (গঞ্জেরহাটি) গ্রামে তাদের চেয়ে বড় বাড়ি আর একটিও নেই। তাদের বসতভিটার উপর দিয়ে আসা যাওয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। কিন্তু সরকারি রাস্তায় মাটিভরাট করে নিজের আয়ত্বে নেয়া তো দখলের পাঁয়তারা। এটা সঠিক কাজ নয়।
Leave a Reply