মাধবপুর প্রতিনিধি ॥ ঠিকাদারের খামখেয়ালীপনা আর সংস্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ তদারকি না থাকায় মাধবপুরে চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের (পিইডিপি ৪) আওতায় ১২টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজ গত ৪ বছরেও শেষ হয়নি। কবে শেষ হবে তা জানে না কেউ। জানা যায়, ২০২১ সালে মাধবপুর উপজেলার ১৪ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজ শুরু হয়। ৪ বছরে সাকুচাইল ও মনতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় নামের দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজ শেষ হলেও অন্য ১২টি বিদ্যালয়ের কাজ ঝুলিয়ে রেখেছে ঠিকাদার। প্রতিটি বিদ্যালয়ের জন্য ব্যয় ধরা হয় ৬০ লাখ টাকা। সেই হিসাবে ১৪টি বিদ্যালয়ের জন্য ৮ কোটি ৪০ টাকা টাকা বরাদ্দ হয়। প্রতিটি বিদ্যালয়ে বিদ্যমান ভবনে বাড়তি ৩টি ফ্লোর স্থাপনের লক্ষ্যে উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ প্রকল্পের মাধবপুর উপজেলার কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল ট্রেডার্স ও মেসার্স গোলাম ফারুক নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে জানা গেছে দুটি প্রতিষ্ঠানেরই মালিক আবুল কালাম নামের এক ব্যক্তি।
২০২১ সালে বিদ্যালয়গুলোতে উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারন কাজ শুরুর পর কোনোটিতে একটি কোনোটিতে দুটি ফ্লোরের কাঠামো ও ছাদ নির্মাণের পর কাজ আর অগ্রসর হয়নি। দফায় দফায় ঠিকাদার কাজ ফেলে লাপাত্তা হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ছাতিয়াইন ইউনিয়নের শিমুলঘর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সম্প্রসারণ কাজের বেলায় ঠিকাদারের লোকজন একাধিকবার কাজ ফেলে লাপাত্তা হয়ে যায়। বিদ্যালয়টিতে সম্প্রসারণ কাজের অন্তত ৪০ ভাগ কাজ এখনো বাকী রয়েছে। এ অবস্থায় সপ্তাহ খানেক আগে ঠিকাদারের লোকজন একগাড়ী বালি নিয়ে এসে আবার কাজ শুরু করে দ্রুতই শেষ করা হবে বলে জানালেও দুই-তিন দিন পরে তারা কাউকে কিছু না জানিয়ে উধাও হয়ে যায়।
উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজের আওতায় থাকা শাহপুর (উঃ) সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর খড়কি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিমুলঘর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আউলিয়াবাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, রসুলপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুরাইখোলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, খাটুরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,বুল্লা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুরমা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর বেজুরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, নোয়াপাড়া চা বাগান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধবপুর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাজ কবে শেষ হবে তা কেউ জানেন না।
ঠিকাদার আবুল কালাম বলেন, উপজেলা প্রকৌশলীর অন্যায় আবদার এবং জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কাজগুলো আটকে গেছে। তবে কাজ যেহেতু শুরু করেছি আশা করি শেষ করতেও পারব।
উপজেলা প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম মৃধা জানান, প্রকল্পের মেয়াদকাল ৯ মাস। এ মেয়াদ বহু আগেই শেষ হয়েছে। ঠিকাদার প্রদত্ত জামানতের টাকার মেয়াদও উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। ঠিকাদার যে পরিমাণ কাজ করেছে সেই পরিমান বিলও উত্তোলন করে নিয়ে গেছেন।
Leave a Reply