বুধবার, ০৯ Jul ২০২৫, ০৩:০০ অপরাহ্ন

চুনারুঘাটের বৃদ্ধের লাশ ভারতের গৌড়নগর এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে বিএসএফ

চুনারুঘাটের বৃদ্ধের লাশ ভারতের গৌড়নগর এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে বিএসএফ

নুরুল আমিন ॥ চুনারুঘাট উপজেলার গুইবিল সীমান্ত থেকে বাংলাদেশী এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করেছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের খোয়াই থানা পুলিশ। সীমান্ত সূত্র জানায়, সোমবার সকালে গুইবিল সীমান্তের ১৯৬৮নং মেইন পিলারের ৫ ও ৬ নং সাব পিলারের কাছে গৌড়নগর এলাকা থেকে বিএসএফ মরদেহটি উদ্ধার করে খোয়াই থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। এ বিষয়টি ফেইসবুকে প্রকাশিত হলে চুনারুঘাট থানার এসআই দেলোয়ার হোসেন ফেসবুকের সূত্র ধরে গাজীপুর ইউনিয়নের ডুলনা গ্রামে গিয়ে মৃত ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করেন। খোয়াই হাসপাতালের মর্গে থাকা ব্যক্তির নাম জহুর আলী (৫৫)। তার বাবার নাম মুনসুব উল্লা। মৃত জহুর আলীর একমাত্র পুত্র অলি মিয়া জানান, তার বাবা ঢাকা বসুন্দরা সিটিতে সিটিএল কোম্পানীতে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কর্মরত। তিনি গত শনিবার বাড়িতে আসেন। রবিবার বিকালে তিনি বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর থেকে তিনি নিখোঁজ হন। আত্মীয়রা অনেক স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন কিন্তু জহুর আলীকে আর খোঁজে পাননি। পরে ফেইসবুকে ছবি দেখে জানতে পারেন তিনি খোয়াই হাসপাতালের মর্গে আছেন। মৃত জহুর আলীর ১ পুত্র ও দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। স্ত্রী সুফিয়া খাতুন বলেন, তার স্বামী যখন বাড়িতে আসেন তখন তার কাছে ১০/১২টা নতুন লুঙ্গি ছিলো। তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে লুঙ্গির ব্যবসা করবেন বলে জানান। ঢাকা থেকে আসার পর স্বামীর কাছে ১০/১১ হাজার টাকাও ছিলো। সেই লুঙ্গি এবং টাকা সাথে নিয়ে তিনি রবিবার সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে বের হন। এরপর আর বাড়ি ফিরেননি। সুফিয়া খাতুন আরো জানান, প্রায় ১২টার সময় এলাকার একজন লোক তাকে বলেছে, তার স্বামী অজ্ঞান হয়ে বাড়ির কাছেই একটি পরিত্যক্ত ধানী জমিতে পড়ে রয়েছেন। সেই খবর পেয়ে তিনিসহ তার আত্মীয়রা ঘটনাস্থলে গিয়ে জহুর আলীকে পাননি। তবে তার পায়ের প্লাস্টিকের নীল রঙের স্যান্ডেল, মাপলার ও মোবাইল ফোন পড়ে থাকতে দেখেন এবং যে পলিথিনে টাকা মুড়ানো ছিলো সেটাও ছেড়া অবস্থায় দেখতে পান তিনি। ঘটনাস্থলের অনতিদূরে সাদা রঙের আরও একজোড়া প্লাস্টিকের স্যান্ডেল উদ্ধার করা হয়।
এ দিকে ভারত থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ফেইসবুকে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির ছবি প্রকাশিত হলে সেই ছবিটি জহুর আলীর বলে সনাক্ত করেন এলাকার ফেইসবুক ব্যবহারকারীরা। সেই সূত্র ধরে চুনারুঘাট থানার দারোগা দেলোয়ার হোসেন ডুলনা গ্রামে জহুর বাড়িতে আসেন এবং তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন। তিনি দুই জোড়া স্যান্ডেল, মোবাইল ফোন ও টাকা মুড়ানো সেই পলিথিন আলামত হিসেবে জব্দ করে থানায় নিয়ে আসেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে বিজিবি ৫৫ ব্যাটালিয়ানের কমান্ডিং অফিসার লেঃ কর্ণেল তানজিল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, বিজিবি ইতোমধ্যেই খোয়াই থানা পুলিশ ও বিএসএফ এর সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। সে দেশের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে মরদেহ ফেরতের পদক্ষেপ নিবে।
জহুর আলী কি ভাবে সীমান্ত এলাকায় গেলেন, কি ভাবে কাঁটা তারের বেড়া অতিক্রম করলেন, কেনো গেলেন সেই রহস্য এখনও অন্ধকারে রয়ে গেছে। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে বা অধিকতর তদন্ত সমাপ্ত হলে জানা যাবে আসল রহস্য। এমনটাই মনে করছেন চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলম।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2024 DailyBijoyerProtiddhoni
Design & Developed BY ThemesBazar.Com