নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ রশিদপুর গ্যাসফিল্ডের সামনের রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি করছিলেন এক ব্যক্তি। ঠিক সে সময় রাস্তা ধরেই যাচ্ছিলেন বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা। সাপ্তাহিক ছুটির ফাঁকে এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে পরিযায়ী জলচর পাখির জরিপে অংশ নিয়ে ঢাকায় ফিরছিলেন তিনি।
চাঁদাবাজির বিষয়টি নজরে এলে তাৎক্ষণিক সেখানে তাদের বহনকারী গাড়ি থামিয়ে ওই কর্মকর্তা হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি করার সময় এক ব্যক্তিকে চ্যালেঞ্জ করেন।
চাঁদাবাজির কাজে ব্যবহৃত হাতিটি ছিল ভীষণ শীর্ণকায় ও মা হাতি। হাতিটির সঙ্গে তার অল্প বয়সী বাচ্চাও ছিল। মাহুত জানান, হাতির মালিক কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নের হোসনাবাদ গ্রামের সোনা মিয়া। হাতিটি লালন-পালনের লাইসেন্সও আছে।
এ সময় বন কর্মকর্তা সেই লাইসেন্স দেখতে চান। কিন্তু মাহুত সেটি দেখাতে না পারায় মালিককে ফোন করতে বলেন। একই সঙ্গে হাতি দিয়ে চাঁদাবাজির ঘটনাটি তিনি মোবাইল ফোনে মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী রেঞ্জ কর্মকর্তা কাজী নাজমুল হককে জানান এবং ঘটনাস্থলে হাজির হতে নির্দেশ দেন।
খবর পেয়ে কাজী নাজমুল হক ছাড়াও ঘটনাস্থলে লাইসেন্স নিয়ে হাজির হন মালিকের ছেলে আনোয়ার হোসেন। এ সময় মোবাইল ফোনে মালিক সোনা মিয়া জানান, হাতি নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ার বিষয়টি তিনি জানতেন না। তাকে না জানিয়েই তার ছেলে আনোয়ার ও মাহুত চলে এসেছে এবং এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে। এ ধরণের কর্মকাণ্ড তিনি কখনো সমর্থন করেন না এবং সমস্ত ঘটনার জন্য ক্ষমা চান। এ বিষয়ে রেঞ্জ কর্মকর্তা কাজী নাজমুল হক বলেন, হাতিটি লালন পালনের যথাযথ লাইসেন্স ছিল। কিন্তু চাঁদাবাজির ঘটনায় তাকে সতর্ক করা হয়েছে। হাতি ব্যবহার করে আর কখনো চাঁদাবাজি করবেন না এ শর্তে মুচলেকা পাওয়ার পর হাতিটির মালিক সোনা মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে বন কর্মকর্তা জোহরা মিলা বলেন, বন্যপ্রাণী ব্যবহার করে চাঁদাবাজি অমানবিক, অনৈতিক এবং বেআইনি। একটি বাচ্চাসহ মা হাতিকে দিয়ে এমন বেআইনি কর্মকাণ্ড কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তাছাড়া বন ও বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘনের বিষয় হালকা করে দেখার সুযোগ নেই।
Leave a Reply