নিজস্ব প্রতিনিধি: আজমিরীগঞ্জে সরকারি নলকূপ থেকে পানি নেয়া বাঁধা দেয়ার জের ধরে আব্দুর রহমান ওরফে বক্কা মেম্বার ও আলাউদ্দিন মেম্বারের লোকজনের মধ্যে প্রায় তিন ঘণ্টা ব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয়পক্ষের অন্ততপক্ষে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছে। এ সময় সংঘর্ষে জড়িতদের ছত্রভঙ্গ করতে পুুলিশ তিন রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। পর সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে৷ সংঘর্ষে আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গতকাল রবিবার সকাল সোয়া ১১ টা থেকে দুপুর প্রায় ২ টা পর্যন্ত জলসুখা মধ্যপাড়ায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, আজমিরীগঞ্জের জলসুখার মধ্যপাড়ার বাসিন্দা বক্কা মেম্বারের পক্ষের মোঃ অলি মিয়ার মেয়ে মোছাঃ ফারজানা বেগম (২৬) গত শনিবার সকাল অনুমান ৮ টায়
প্বার্শবর্তী আলাউদ্দিন মেম্বারের মেয়ের জামাতা মোঃ ওয়াহিদ মিয়ার বাড়ির সামনে সরকারি একটি নলকুপ থেকে খাবার পানি আনতে যায়। আলাউদ্দিন মেম্বারের পক্ষের আজমান মিয়ার পুত্র ওয়াসিম মিয়া পানি নিতে তাকে বাঁধা প্রদান করে। এ নিয়ে উভয়ের মাঝে বাক বিতন্ডা বাঁধে। এক পর্যায়ে ওয়াসিম মিয়া ফারজানাকে গালমন্দ করে ও ৪ বছর বয়সি শিশুর গালে থাপ্পড় মারে৷ এরই জের ধরে পরদিন অর্থাৎ গতকাল রবিবার সকালে জলসুখা বাজারে অলি মিয়া ও আজমান মিয়ার মধ্যে বাক বিতন্ডা হয়। বাক বিতন্ডার একপর্যায়ে দুইজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে শান্ত করে তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বাড়িতে পৌঁছার বিষয়টি জানাজানি হলে, বক্কা মেম্বার ও আলাউদ্দিন মেম্বারের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বের হয়ে আসেন। এরই এক পর্যায়ে একপক্ষ অপরপক্ষের উপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সারা এলাকাব্যাপী বিচ্ছিন্নভাবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে খবর পেয়ে আজমিরীগঞ্জ থানার পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে থানার এসআই জিয়াউর রহমান সহ এক পুলিশ সদস্য আহত হন। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে গেলে পুলিশ তিন রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। একই সময় খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। সংঘর্ষে পুুলিশ সহ অর্ধ-শতাধিক লোক আহত হয়। এরা হলো, এনামুল (৩০),বাহার (২৮), মেহেদী (২১), কাওসার (২৮), ফয়সাল (৩১), জাহিদুল (২২), ভুট্টু মিয়া (৪০), আফদাল (২৬), তকদির (৩৮), জিয়াউর (৩৫), রাতুল (১৬), শামিম (২১), জফর উদ্দিন (৪২),শাওন (১৯) শামীম (৩৯) । এদের মধ্যে এনামুল (৩০), কাউছার (২৮) ও শামীম মিয়া (৩৯)। এদের মধ্যে গুরুতর আহতদের হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকিদের আজমিরীগঞ্জ ও বানিয়াচং হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে আদিল হোসাইনের ঘর ভাংচুর করা হয়। এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ এবিএম মাঈদুল হাছান বলেন, সংঘর্ষে থামাতে পুুলিশ তিন রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে৷ পর সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
Leave a Reply