চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ চায়ের মওসুমের প্রায় দুই মাস পর চুনারুঘাটের ২৪টি চা বাগানে পুরোদমে চায়ের উত্তোলন শুরু হয়েছে। চলতি মওসুমে খরার কারণে মওসুমের প্রথম ফেব্রুয়ারী মার্চ মাসে উপজেলার হাতে গোনা কয়েকটি চা বাগান কৃত্রিম ভাবে পানি সেচের মাধ্যমে উৎপাদন শুরু হলেও অধিকাংশ বাগান খরার পুড়ে চা গাছ নষ্ট হয়ে যায়। অবশেষে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে কাঙ্খিত বৃষ্টি হওয়ার চলতি সপ্তাহ থেকে সকল বাগানে চা পাতা চয়ন ও উৎপাদন শুরু হয়েছে। চলতি বছর উপজেলার লস্করপুর ভ্যালীতে উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয় ১ কোটি ৩০ লাখ কেজি চা। কিন্তুু মওসুমের শুরুতেই অনাবৃষ্টির কারণে ভ্যালীর চা বাগানগুলো উৎপাদনে যেতে পারেনি। এতে শংকায় পড়ে চা বাগানগুলো। লক্ষমাত্রা অর্জন নিয়েও আশংকার কথা জানান বাগান কর্তৃপক্ষ। কিন্তুু আশার কথা দেরিতে হলেও বৃষ্টির দেখা মিলে এবং চা বাগানের বিবর্ণ রূপ থেকে সবুজে পরিনত হয় চা বাগানগুলো। তবে এ বৃষ্টি পর্যাপ্ত নয়। চা উৎপাদনে পরিমিত বৃষ্টির প্রয়োজন বলে বলছেন চা সংশ্লিষ্টরা। বাগান মালিকরা বলছেন, দীর্ঘ প্রায় ৬ মাস পর বৃষ্টির দেখা পেল চা বাগান গুলো। এর আগেই উপজেলার লস্করপুর ভ্যালিতে ছোট বড় ২৪টি চা-বাগানের অধিকাংশ চা বাগানে খরায় নতুন সৃজিত চায়ের ৪০ শতাংশ চারাগাছ এবং ১০ শতাংশ পুরনো চা-গাছ পুড়ে গেছে। কোন কোন বাগানে কৃত্রিম পানি সেচ দিয়ে মার্চ মাসে উৎপাদন সীমিত আকারে শুরু করলেও চলতি মাস থেকে সকল চা বাগানে উৎপাদন শুরু হয়েছে। এতে চা বাগান সংশ্লিরা বেশ খুশি। ন্যাশনাল টি কম্পানির (এনটিসি) চন্ডিছড়া চা-বাগানের ব্যবস্থাপক মোঃ সেলিমুর রহমান বলেন, দেরিতে হলেও বৃষ্টির দেখা পেয়ে চা শ্রমিকরা খুশি। তারা পুরোদমে পাতা চয়ন করতে পারছেন এবং বাগানের চা তৈরীও শুরু হয়েছে। তবে আশংকা রয়েছে এবার লক্ষ্যমাত্রা পুরন করা যাবে কিনা। কারণ আগামী দিনে পরিমিত বৃষ্টি না হলে উৎপাদনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা যাবে না। লালচান্দ চা বাগানের চা শ্রমিক পপি রাণী বাউরী বলেন, প্রতি বছরে মার্চ মাস আসলে আমরা দিনভর চা-পাতার কুঁড়ি উত্তোলন করি কিন্তুু এ বছর বৃষ্টি দেরিতে আসায় আমরা এখন পুরোদমে কাজ করতে পারছি। তিনি বলেন, বাগানে নতুন কুঁড়ি আসায় আমাদের কাজ-কর্ম বেড়েছে। দেউন্দি টি কোম্পানীর জি এম রিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘প্রয়োজনীয় বৃষ্টি ও সহনীয় তাপমাত্রা চা উৎপাদনের মূল চালিকাশক্তি। চা-গাছের জন্য বৃষ্টি খুবই প্রয়োজন।’তিনি বলেন, এবকার বৃষ্টি দেরিতে হওয়ায় আমরা সবেমাত্র উৎপাদনে যেতে পেরেছি। চলতি সপ্তাহে আমাদের ফ্যাক্টরি চালু করেছি। অথচ বিগত দিনে আমরা ফেব্রুয়ারি মাসেই আমরা মেশিন চালু করতে পারতাম। তিনি বলেন এই সময়ে চা অঞ্চলে ১৫ থেকে ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। গত বছরের মার্চ মাসে ৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। অথচ চলতি বছরের এপ্রিলে এসে আমরা বৃষ্টির দেখা পেয়েছি।
Leave a Reply