শনিবার, ১২ Jul ২০২৫, ১২:২৬ পূর্বাহ্ন

বানিয়াচংয়ে সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা ॥ দেখার যেন কেউ নেই

বানিয়াচংয়ে সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা ॥ দেখার যেন কেউ নেই

মখলিছ মিয়া, বানিয়াচং ॥ বানিয়াচং সদরের প্রধান সড়ক ও বাজারগুলোতে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। দেখার যেন কেউ নেই। হালকা বৃষ্টি হলেও সড়কে পানি জমে চলাচলে চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। আর একটু ভারি বর্ষণ হলে তো বাজারসহ বিভিন্ন রাস্তায় হাঁটু সমান পানি জমে থাকে এবং দোকানপাঠসহ নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়ে। বর্তমান সময়ে বানিয়াচংয়ের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে জলাবদ্ধতা। ভূমি খেকোরা খাল-নালা দখল করে ভরাট ও পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সড়ক পথ এমনকি বাজারের অলিগলি পর্যন্ত জলমগ্ন হয়ে পড়ছে। এতে জন দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করছে। গত এক যুগ ধরে বানিয়াচংয়ে গড়ের খাল ও সুনারু খাল দখলের রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে। বেশ কয়েক বছর আগে সরকারিভাবে উদ্যোগ নিয়ে কিছু জায়গা দখল মুক্ত করা হলেও আবারও তা বেদখল হয়ে গেছে। ফলে বিশাল বানিয়াচং গ্রামের পানি নিষ্কাশনের পথ রুদ্ধ হয়ে পড়ছে। সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই অনেক রাস্তা জলমগ্ন হয়ে যানবাহন ও জন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয়রা জানান, টানা কয়েক দিন বৃষ্টি হলে ভোগান্তির শেষ থাকে না। তখন নিচু জায়গার পাশাপাশি আশপাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ছোট-বড় দোকানগুলোতেও পানি ঢুকে যায়। এমনতিইে উপজেলার সদরের অনেক রাস্তার অবস্থাই এখন নাজুক। একদিন বৃষ্টি হলেই রাস্তাগুলোতে চলাচল কঠিন। বানিয়াচং সদরের নতুন বাজার, বড়বাজার, জনাব আলী কলেজ সড়ক, আদর্শ বাজার সড়ক, সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সড়ক, বড় বাজারের মাকুর্লী রোড, শহীদ মিনার রোড, এবং সৈদ্যারটুলা রোডসহ বেশ কয়েকটি রাস্তা একেবারেই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই এসব রাস্তায় পানি জমে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। ফলে জনদুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। এই জলমগ্নতার কারণে পাকা রাস্তাাগুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে খানাখন্দকের সৃষ্টি হচ্ছে। এলজিইডি প্রতি বছরই সড়কগুলোতে সংস্কারের কাজ করছে। এতে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। শুধু শুধু সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ গচ্ছা যাচ্ছে। পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা গড়ে না তোলে এলজিইডি এসব বিচ্ছিন্ন কাজে অনেকেই প্রশ্ন তোলছেন। এশিয়ার বৃহত্তম গ্রাম বানিয়াচংয়ের খাল-বিলগুলো এক শ্রেণির ভূমি খেকোর দখলে চলে গেছে। এগুলো ভরাট হওয়ার ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই ঐতিহ্যবাহী গ্রামের বিভিন্ন জনপদে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এখানকার জনসাধারণ। এ দিকে বড়বাজার হতে আদর্শবাজারের রাস্তাটির অবস্থা একেবারেই নাজেহাল। সামান্য বৃষ্টি হলেই এ এলাকার হাজার হাজার মানুষের চলাচলের রাস্তাটি প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। সামান্য একটি ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এ রাস্তাটি সামান্য বৃষ্টি হলেই জলে একাকার হয়ে যায়। দ্রুত এসকল রাস্তাগুলোর পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করলে বর্ষা মৌসুমে ঐসব রাস্তায় চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষের চলাচলের রাস্তাগুলো বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এছাড়া বড়বাজার থেকে সারংবাজার যাওয়ার মধ্যবর্তী রাস্তাটির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগি হওয়ার উপক্রম। দ্রুত এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া জরুরি।
নতুন বাজার মেইন রোডসহ বিভিন্ন অলিগলিতে পানি লেগে থাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ব্যবসা পরিচালনা করতে হিমশিম খাচ্ছেন। সব সময়ই বৃষ্টির পানি জমে থাকে এবং স্যাঁত স্যাঁতে অবস্থা বিরাজ করছে। বানিয়াচংয়ের সর্বস্তরের মানুষের গণদাবী যে সকল রাস্তায় কাজ করা হবে, সেসব রাস্তার কাজের পাশাপাশি ড্রেনেজ ব্যবস্থাও থাকাও দরকার। অনেকেই আক্ষেপ করে জানান, কর্তৃপক্ষ রাস্তার কাজ অনুমোদন করলেও ড্রেনের কাজের অনুমোদন দেয়নি। ফলে ওই সকল রাস্তা মেরামত হলেও অল্প দিনের মধ্যেই আবার চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এ বিষয়ে বানিয়াচং প্রেসক্লাব সভাপতি ইমদাদুল হোসেন খান জানান, দ্রুত সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে প্রভাবশালীদের কবল থেকে খালগুলো পুনঃরুদ্ধার করতে না পারলে বানিয়াচংয়ের প্রাকৃতিক পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে বানিয়াচং কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক মুক্তাদির হাসান সেবুল জানান, জনস্বার্থ বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এ বিষয়ে এখনই উদ্যোগী হয়ে ব্যবস্থা না নিলে যেকোনো সময় জলাবদ্ধার কবলে পড়ে মারাত্মক বিপর্যয়ের আশংকা রয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2024 DailyBijoyerProtiddhoni
Design & Developed BY ThemesBazar.Com