স্টাফ রিপোর্টার ॥ অসহনীয় লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলাবাসী। দীর্ঘ সময় লোডশেডিং থাকায় ফ্রিজে থাকা খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গ্রাহক অভিযোগ নম্বরে ফোন করেও সাড়া মিলছে না কর্তৃপক্ষের।
সন্ধ্যার আগে মুদি দোকান থেকে মোমবাতি হাতে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন ডালিম মিয়া (২৪)। হাতে মোমবাতি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কারেন্ট (বিদ্যুৎ) যা শুরু করছে, ঠিকমতো খাইতে পারি না। সারা রাইত ঘুমাইতে পারি না। রাইতে কি আর আন্ধাগোন্দা (অন্ধকারে) থাকন যাইবো? আমাদের আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় তো কারেন্ট যায় না, মাঝে মধ্যে আয়!’
উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নের ব্যবসায়ী লিটন বলেন, ‘কারেন্টের কথা বলে আর লাভ নেই। রাতে-দিনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র ৬-৭ ঘণ্টা কারেন্ট থাকে। এই আসে, এই যায়। বাজারে তো গরম আরও বেশি। তারপরও দোকান খুলে বসে আছি। কী আর করব!’
আজমিরীগঞ্জ বাজারের ওষুধের ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আজমিরীগঞ্জ বাজারে মোটামুটি ভালো থাকে, কিন্তু গ্রামে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এমন নজিরবিহীন লোডশেডিংয়ে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য কম হচ্ছে।’
স্থানীয়রা জানান, ছাত্র-ছাত্রীরা ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারছে না। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হচ্ছে, এরপরও গরম প্রচুর। গত এক সপ্তাহ উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় দৈনিক ৬-৭ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়নি।
তীব্র গরমে যখন মানুষ হাঁপিয়ে উঠছে, ঠিক তখনই এই লোডশেডিং। সকাল, দুপুর কিংবা রাতে দীর্ঘ সময়ের লোডশেডিংয়ে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে অনেকে বিরক্তি প্রকাশ ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট দিচ্ছেন। অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যুৎ পেতে অভিযোগ নম্বরে ফোন করা হলেও কোনো সাড়া মিলছে না বিদ্যুৎ অফিস কর্তৃপক্ষের।
আজমিরীগঞ্জের পল্লী বিদ্যুৎ সাব-জোনাল অফিসের ইঞ্জিনিয়ার মাহবুব হাসানের সঙ্গে মুঠোফোনে আলাপ করলে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে লোডশেডিং হওয়ার কারণ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ আছে। ভারত থেকে আদানি গ্রুপ ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিয়েছে। এজন্য সরকার বিদ্যুৎ দিতে পারছে না। পরিমাণে খুবই কম দিচ্ছে। আমাদের কাজ বিদ্যুৎ বিতরণ করা। সাপ্লাই বেশি পেলে আমার বেশি সরবরাহ করতে পারব।’
Leave a Reply