বৃহস্পতিবার, ১০ Jul ২০২৫, ০১:৩৬ অপরাহ্ন

মাধবপুরে বয়স্ক ভাতার কার্ড দেয়ার নামে বৃদ্ধাদের কাছ থেকে ৫’শ টাকা করে নেন মেম্বার কামাল

মাধবপুরে বয়স্ক ভাতার কার্ড দেয়ার নামে বৃদ্ধাদের কাছ থেকে ৫’শ টাকা করে নেন মেম্বার কামাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একটি বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য বছরের পর বছর আশায় আশায় দিন গুনলেও ভাগ্যের শিঁকে ছিঁড়েনি ৮৭ বছরের রাবিয়া খাতুনের। মেম্বারকে ‘খরচের’ টাকা দিয়েও তার আশার গুড়ে বালি। জীবদ্দশায় মিলবে বয়স্ক ভাতার কার্ড এমন সম্ভাবনাও দেখছেন না তিনি। এনআইডি অনুসারে রাবিয়া খাতুনের জন্ম ১৯৩৭ সালের মার্চ মাসে।
মাধবপুর উপজেলার ১০নং ছাতিয়াইন ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের শিমুলঘর গ্রামের হতদরিদ্র রাবিয়া খাতুনের স্বামী  কটাই মিয়া প্রায় ৫০ বছর আগে মৃত্যুবরণ করেছেন। একমাত্র ছেলে তাহের হোসেনও ১০ বছর আগে মারা গেছেন। তাহের হোসেনের ছেলে আলমগীর হোসেন এবং রাসেলও হতদরিদ্র। আলমগীর অন্যের  জমি বর্গা চাষ করে কোনোমতে পরিবার চালান। আর রাসেল ঢাকায় হোটেল শ্রমিকের কাজে নিয়োজিত। রাবিয়া খাতুনের ২ মেয়ে স্বামী সংসার নিয়ে ব্যস্ত। দরিদ্র হওয়ায় মায়ের সুখসুবিধা দেখার সময় হয় না তাদের। বার্ধক্যজনিত কারণে সারাবছর নানান অসুখ-বিসুখ লেগে থাকে রাবিয়া খাতুনের।
নাতি আলমগীরের সংসারে দুইবেলা খাবার জুটলেও অসুখ-বিসুখে ডাক্তার দেখানো কিংবা ঠিকঠাক মতো ওষুধ খাওয়ার সৌভাগ্য হয় না তার। এ অবস্থায় একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড হলে খুবই উপকার হতো ভেবে স্মরণাপন্ন হন ওয়ার্ড মেম্বার কামাল মিয়ার।
কামাল মিয়া রাবিয়াকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তার কাছ থেকে ৫০০ টাকা নেন। তবে কামাল মিয়া জানিয়েছেন তিনি অনলাইন খরচ বাবদ ২০০ টাকা করে নিয়েছেন।
একইভাবে সারা গ্রাম থেকে ১৫০ জনের কাছ থেকে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেয়ার নামে অনলাইন খরচ বাবদ ২০০ টাকা করে নেওয়ার কথাও স্বীকার করেছেন কামাল মিয়া মেম্বার। যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন গত নভেম্বরে অনলাইনে তাদের নাম তালিকাভুক্ত করেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। খোদেজা খাতুন, জোছনা খাতুন, মাহমুদা বেগম ও স্বপ্না বেগমসহ অনেকেই জানিয়েছেন তারা ভাতা পাওয়ার আশায় বছর খানেক আগে মেম্বারকে খরচের টাকা দিয়েও কিছুই পাননি আজ পর্যন্ত। ছাতিয়াইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিনহাজ উদ্দিন চৌধুরী জানান, বরাদ্ধ আসলে তালিকাভুক্তরা পর্যায়ক্রমে কার্ড পাবেন। তবে অনলাইন খরচের নামে টাকা নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। উপজেলা সমাজসেবা অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নিপুন রায় জানিয়েছেন, আমি এখানে একবারেই নতুন। তারপরও খোঁজ নিয়ে দেখবো।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2024 DailyBijoyerProtiddhoni
Design & Developed BY ThemesBazar.Com