শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ১০:১৮ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
কাকাইলছেও- রসুলপুর সড়ক বর্ষা মৌসুমে  চলাচলে চরম দুর্ভোগ মালয়েশিয়ায় আজমিরীগঞ্জের প্রবাসী মহিবুরের মৃত্যু শোকার্ত পরিবার সাবেক এমপি মজিদ খানের পুকুরপাড়ে বজ্রনিরোধক যন্ত্র শেখ হাসিনা ও মাহবুব আলীসহ ৫ জনের বিরোদ্ধে মামলার প্রস্তুতি অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে বাংলাদেশ হবিগঞ্জ বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনে পুলিশের ভুমিকা মাধবপুরে ৫২ মাদক কারবারি গ্রেফতার॥ মূলহোতারা এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে মাধবপুরের আজহার কিশোরগঞ্জে ৪০ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার ৩ হবিগঞ্জে সরকারী কলেজ শিক্ষকদের মতবিনিময় সভা জেলা কমিটি গঠন মাদক, বাল্য বিবাহ ও ইন্টানেটে আসক্তি প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের শপথ
অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরীর বিদায়

অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরীর বিদায়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজনীতিতে অগ্নিকন্যা হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার   হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। পারিবারিক সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন মতিয়া চৌধুরী। সপ্তাহখানেক আগে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছিলেন। গতকাল বুধবার সকালে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে বেলা ১২টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শেরপুর-২ আসনের ছয়বারের সংসদ সদস্য মতিয়া চৌধুরী ১৯৯৬, ২০০৯ ও ২০১৩ সালে তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ সংসদে তিনি উপনেতার দায়িত্ব পালন করেন। বামধারার রাজনীতি থেকে উঠে আসা মতিয়া চৌধুরী শেষ জীবন কাটিয়েছেন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে। রাজনীতির ময়দানে সোচ্চার কণ্ঠ মতিয়া জীবনে অন্তত ১৫ বার কারাবরণ করেন। রাজনৈতিক আন্দোলনে রাজপথে সরব কণ্ঠ ছিল তার। তেজী বক্তব্যের কারণে অগ্নিকন্যার খ্যাতি পান। মতিয়া চৌধুরীর মৃত্যুতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করা হয়েছে। দলটি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে শোকবার্তা প্রকাশ করে। আজ বাদ জোহর রাজধানীর গুলশানের আজাদ মসজিদে জানাজা শেষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে বলে পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে মতিয়া চৌধুরীর লাশ তার নির্বাচনী এলাকায় নেয়া হবে না বলে তার ভাই মাসুদুল ইসলাম চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। ১৯৪২ সালের ৩০শে জুন পিরোজপুরে মতিয়া চৌধুরীর জন্ম। তার বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। ১৯৬৪ সালে সাংবাদিক বজলুর রহমানের সঙ্গে সংসার জীবন গড়ে তুলেন মতিয়া চৌধুরী। ইডেন কলেজে পড়ার সময় বাম ধারার ছাত্ররাজনীতিতে যুক্ত হন মতিয়া চৌধুরী। ১৯৬১-৬২ মেয়াদে তিনি ছিলেন ইডেন কলেজ ছাত্রী সংসদের ভিপি। ১৯৬৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হন। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফার আন্দোলনে জোরালো ভূমিকা পালন করেন। আন্দোলনে অগ্নিঝরা বক্তব্য দেয়ার জন্য রাজনীতিতে অগ্নিকন্যার খ্যাতি পান তিনি। ১৯৬৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে যোগ  দেন মতিয়া চৌধুরী।  একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনী গঠনে তিনি সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৯ সালে ন্যাপ ছেড়ে মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৯৮৬ সালে দলের কৃষি বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পান। পরে তিনি দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হন। রাজনৈতিক জীবনে ১৫ বার গ্রেপ্তার হয়েছেন মতিয়া চৌধুরী। এরমধ্যে আইয়ুব শাসনামলে পর পর চারবার জেলে যেতে হয়েছে তাকে। শেষ দুই বছর টানা জেলেই থাকতে হয়েছে। ১৯৬৯ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জাতি স্বৈরশাসকের কবল থেকে মুক্তি পেলে তিনিও মুক্তি পান। ১৯৭৫ সালের পর প্রাণনাশের হুমকিতে বেশ কয়েক মাস কাটিয়েছেন আত্মগোপনে। পরের সরকারের সময়ে আবারো জেলে যেতে হয়। এরশাদ সরকারের আমলে ৯ বার যেতে হয়েছে কারাগারে। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময়ও তাকে কারাগারে যেতে হয়। স্বামী বজলুর রহমানের মৃত্যুর পর তার নামে ফাউন্ডেশন করে নানা কল্যাণমুখী কাজ করেছেন মতিয়া চৌধুরী। নিঃসন্তান মতিয়া চৌধুরী সাদামাটা জীবনযাপনের জন্য রাজনৈতিক অঙ্গনে মানুষের শ্রদ্ধা কুড়িয়েছিলেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2024 DailyBijoyerProtiddhoni
Design & Developed BY ThemesBazar.Com