নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ আজমিরীগঞ্জ বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ এখন পর্যাপ্ত। মৌসুমী এসব সবজির দামে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। তবে আলুর বাড়তি দামে সেই স্বস্তি উবে যাচ্ছে।
পুরোনো আলুর দাম এখনও ৭৫-৮০ টাকা কেজি। সপ্তাহের ব্যবধানে পুরোনো আলুর দাম বেড়েছে কেজিতে ৫-১০ টাকা। গত সপ্তাহে পুরোনো আলুর সর্বনিম্ন খুচরা দর ছিল ৭০ টাকা। তবে নতুন আলুর দাম তুলনামূলক কমেছে। গত সপ্তাহে নতুন আলুর দাম ছিল কেজি ১২০-১৪০ টাকা। বর্তমানে এক কেজি নতুন আলু কিনতে লাগছে ১০০-১২০ টাকা। এই দামকে অনেক বেশি মনে করছেন ক্রেতারা। গতকাল শুক্রবার কাকাইলছেও চৌধুরীবাজারের হাটবার, কাঁচাবাজারে বাজার করতে এসেছিলেন অভিমুন্য সূত্রধর। তিনি বলেন, বাজারে দামের দিক থেকে আলুই এখন তরকারির রাজা। এখন কোনও সবজিই ১০০ টাকার উপরে নেই। এক মাত্র আলুর দাম এর উপরে রয়েছে। নতুন আলুর দাম ১২০ টাকা কেজি। আর কত দিন ধরে আলুর দাম এত বেশি থাকবে তাও কেউ বলতে পারছে না। অন্যান্য বছর মৌসুমের শুরুতে নতুন আলুর দাম কিছুটা বাড়তি থাকলেও এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে দাম হাতের নাগালে চলে আসতো। এবার এক মাস ধরে নতুন আলু বাজারে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু দাম কমার কোনও লক্ষণ দেখছি না।
মৌসুমী সবজি বাজারে আসায় দাম কমলেও আলুর কারণে খরচ বাড়ছে বলে জানান ওই কাঠমিস্ত্রি। তিনি বলেন, শীতকালীন সবজির তরকারি খেতে ভালো লাগে। তবে শীতকালীন প্রতিটি সবজির সঙ্গে কিছু আলু যুক্ত না করলে তরকারি স্বাদ হয় না। এদিকে আলুর দাম কমছেই না। এই মৌসুমে এখনও নতুন আলু কেনাও হয়নি। দাম কমলে কিনবো। আজমিরীগঞ্জের টানবাজার সহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, ফুলকপি-বাঁধাকপিসহ নানা রকমের শীতের সবজি সাজিয়ে রাখতে দেখা গেছে। বেশিরভাগ সবজি বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। বিক্রেতারা বলছেন, গত সপ্তাহের তুলনায় শিম, মুলা, বেগুনসহ কয়েকটি সবজির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা কমেছে। পাহাড়পুর বাজারের সবজি বিক্রেতা সুখলাল দাস বলেন, গত সপ্তাহে যে শিম ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি, এ সপ্তাহে তার দাম নিচ্ছি ৮০ টাকা। গত শুক্রবার মুলার দাম ছিল ৬০ টাকা, এই শুক্রবার দাম এক কেজি ৫০ টাকা। শীতের সবজি শালগমের দেখা পাওয়া গেছে বাজারে। এই সবজিটির দাম পড়ছে ৮০ টাকা কেজি। বাজারে দেশি তাজা টমেটোরও দেখা মিলছে। তবে চড়া দামের কারণে অনেকে কিনতে সাহস পাচ্ছে না বলে জানালেন ওই বাজারে পণ্য কিনতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী বিশ্বজ্যোতি দাস। তিনি বলেন, “দোকানদাররা এমনভাবে টমেটোর কেজি ২০০ টাকা চাইলেন, যেন মনে হচ্ছে- এটা খুবই সস্তা। ওই বাজারে আমদানি করা লাল রঙের টমেটো বিক্রি করতে দেখা গেছে ১৩০-১৫০ টাকা কেজি। কাঁচামরিচের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কমেছে। এক কেজি কাঁচামরিচ পাওয়া যাচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। এছাড়া গোল বেগুন ১০০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে দাম বেড়েছে পেঁপের। গত সপ্তাহে যে পেঁপের দাম ছিল ৫০ টাকা কেজি, এই সপ্তাহে তা ৬০ টাকা হয়েছে। করলা পাওয়া যাচ্ছে ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে। মাঝারি আকারের ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৫০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে বেশিরভাগ বাজারে। যে মিষ্টিকুমড়া এতদিন ফাঁলি আকারে বিক্রি হতো, এখন সেই মিষ্টিকুমড়াও বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে। এক কেজি মিষ্টিকুমড়ার দাম পড়ছে ৬০-৭০ টাকা। এছাড়া প্রতিকেজি পটল ৬০-৮০ টাকা, কচুরমুখী ৮০-১০০ টাকা, ঢেঁড়শ, ঝিঙা, ধুন্দল ও শশা ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লেবুর হালি পড়ছে ১৫-২০ টাকা। পুঁইশাকের আঁটি পড়ছে ৩৫ টাকা এবং পালং ও লাল শাকের আঁটি ২০-২৫ টাকা। বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকা কেজি দরে। আমদানি করা পেঁয়াজ ১০০-১১০ টাকা কেজি।
Leave a Reply