সোমবার, ৩০ Jun ২০২৫, ১০:০২ পূর্বাহ্ন

 ইতালিতে চাকরির লোভ দেখিয়ে জাল ভিসা প্রদান কোটি টাকা আত্মসাৎ

 ইতালিতে চাকরির লোভ দেখিয়ে জাল ভিসা প্রদান কোটি টাকা আত্মসাৎ

 

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার করগাওঁ ইউনিয়নের পুরুষোত্তমপুর গ্রামের নোহেল আহমেদসহ ১০ যুবকের কাছ থেকে ইতালিতে ভালো চাকুরির লোভ দেখিয়ে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে । একই ইউনিয়নের গুমগুমিয়া গ্রামের নাজিম উল্লার ছেলে ইতালি প্রবাসী আক্কাছ মিয়া ও তার ভাই এবং স্ত্রীর বিরুদ্ধে। উচ্চ সুদে ঋণের টাকা দিয়েও ইতালি যেতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী নোহেল আহমেদ সহ ১০টি পরিবার। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় একাধিকবার গ্রাম্য সালিসের মুরুব্বীয়ান, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের দ্বারস্থ হয়েও কোনো সুরাহা হয়নি বলে জানান ভুক্তভোগীরা। তবে আক্কাছের ভাই জনৈক মুরুব্বীর মাধ্যমে ৭ লাখ টাকা ফেরৎ দিলে বাকী ১ কোটি ৯ লাখ টাকা উদ্ধার করা যায়নি। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন নোহেল আহমেদ।
অভিযোগ সুত্রে জানাযায়, উপজেলার করগাওঁ ইউনিয়নের গুমগুমিয়া গ্রামের নাজিম উল্লার ইতালি প্রবাসী ছেলে আক্কাছ মিয়া, তার ভাই রফিক মিয়া, নাসির মিয়া, বশির মিয়া, সফিক মিয়া ও তার স্ত্রী আলপিনা বেগম পুর্ব পরিচয়ের সুত্রধরে একই ইউনিয়নের পুরুষোত্তমপুর গ্রামের মৃত তোফাজ্জল হকের ছেলে নোহেল আহমেদকে স্বপ্নের দেশ ইতালিতে ভালো চাকুরির সুযোগ-সুবিধা আছে, জনপ্রতি ১২ লাখ টাকায় ভিসা দেয়া যাবে, সেই সাথে ভালো কোম্পানীতে চাকুরীর সুযোগের লোভ দেখিয়ে নোহেল আহমদের মাধ্যমে সে নিজেসহ ১০ জনের ইতালীর ভিসার জন্য ১ কোটি ২০ লাখ টাকা পর্যায়ক্রমে প্রবাসী আক্কাছ মিয়াসহ তার পরিবারের কাছে প্রদান করেন। কিছু দিন পর আক্কাছ মিয়া তাদের নামে ইতালির ভিসা পাঠায়। ওই ভিসা গুলো যাচাই-বাচাই করে অনলাইনে চেকিং করে দেখা যায় সব ভিসা জাল। জাল ভিসা পেয়ে অসহায় ওই যুবকরা ও তাদের পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়ে। ভেস্তে যায় স্বপ্নের দেশ ইতালি যাওয়া। ভুক্তভোগিরা বারবার প্রতারক আক্কাছ মিয়া ও তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে সঠিক ভিসা বা টাকা ফেরৎ না পেয়ে সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে ধর্ণা দিচ্ছেন। এক পর্যায়ে ৭ লাখ টাকা উদ্ধার করলেও প্রায় ২/৩ বছর ধরে দেই দিচ্ছি বলে বাকী টাকা দেয়া হচ্ছে না। এদিকে উচ্চ সুদে ঋন করে এবং কেউ কেউ জায়গা জমি বিক্রি করে টাকা দেয়ায় পথে বসেছেন। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী নোহেল আহমেদ বলেন, পুর্ব পরিচয়ের সুত্র আক্কাছ মিয়া, তার ভাইয়েরা ও তার স্ত্রী মিলে আমাকে ভালো চাকুরীর লোভ দেখিয়ে ইতালি নেয়ার স্বপ্ন দেখায়। ফলে আমিসহ ১০ জনের পাসপোর্ট ও জনপ্রতি ১২ লাখ করে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা আমার মাধ্যমে প্রদান করি। টাকা গুলো আক্কাছ মিয়া, তার ভাইয়েরা ও তার স্ত্রী আলপিনা বেগমের কাছে পর্যায়ক্রমে দেয়া হয়। টাকা গুলো নিয়ে ৩ মাসের মধ্যে ভিসা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ৬ মাস পরে ভিসা দিলেও তা জাল ভিসা। আমিসহ ১০টি পরিবার বর্তমানে ঋণের বুঝা নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। এ ব্যাপারে করগাওঁ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহিদ বলেন, ইতালি যাবার জন্য উল্লেখিত টাকা আক্কাছ মিয়া ও তার পরিবারের কাছে প্রদানের ঘটনা সত্য। আমরা অনেক চেষ্টা করে ৭ লাখ টাকা উদ্ধার করলেও বাকী টাকা উদ্ধার করতে পারিনি। ভুক্তভোগীরা উক্ত প্রবাসী প্রতারক আক্কাছ মিয়া ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দাবী জানিয়েছেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved 2024 DailyBijoyerProtiddhoni
Design & Developed BY ThemesBazar.Com