নিজস্ব প্রতিনিধি: আজমিরীগঞ্জের কাকাইলছেওয়ে কুশিয়ারার কালনী নদীর ভাঙ্গনে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে একের পর এক গ্রাম, রাস্তাঘাট ও কৃষিজমি সর্বশান্ত হচ্ছে এলাকার হাজারো পরিবার। বেশ কিছুদিন ধরে নূতন করে শুরু হয়েছে ভাঙন কাকাইলছেওয়ের সাহানগর ও নৃসিংহপুর গ্রামে। দীর্ঘ ৫ – ৬ বছর পূর্ব থেকে শুরু হওয়া ভাঙনে ইতিমধ্যে একই এলাকার কালনীপাড়া, বদরপুর, মনিপুর, সৌলরী, কাদিরপুর, গোসাইপুর, নজরাকান্দা, কণ্যাজুরি, উমেদনগর, রুদ্রনগর গ্রামের শত শত ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আজমিরীগঞ্জ – বানিয়াচং আসনের তৎকালীন সংসদসদস্য, পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগন একাধিকবার ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে আসেন। পর পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্যবস্হাপনায় ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হয়। একই সময় কাকাইলছেও চৌধুরীবাজারের নদীর তীরের ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা সহ ব্লক দ্বারা উন্নয়ন করা হয়।
প্রসঙ্গত,
আজমিরীগঞ্জের কাকাইলছেওয়ের বদরপুরে দীর্ঘ ৫-৬ পূর্ব থেকে শুরু হয়। কুশিয়ারার কালনী নদীর ভাঙ্গনে অর্ধ-শতাধিক বাড়িঘর সহ কয়েক একর কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বাড়িঘর হারিয়ে অসহায় সহায় সম্বলহীন পরিবারগুলো বদরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন নিজেদের মালিকাধীন কৃষিজমি সমূহে নিজেরাই পূনর্বাসিত হন। বছর খানেকের মাথায় শুরু হয় সংলগ্ন মনিপুর ও সৌলরী গ্রাম এলাকায় ভাঙন। ভাঙনের তীব্রতায় ওই গ্রামের আরও অর্ধ-শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে ও কৃষিজমি হারায়। একই ভাবে তারা নিজেরাই পূনর্বাসিত হন নিজ মালিকাধীন কৃষিজমিতে। পরবর্তীতে কাদিরপুর, নজরাকান্দা, গোসাইপুর, উমেদনগর,কন্যাজুরী, রুদ্রনগর গ্রামের শতাধিক বাড়িঘর ও কয়েক একর কৃষিজমি, রাস্তাঘাট ভাঙনের কবলে পড়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সম্প্রতি, বর্ষার পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে আজমিরীগঞ্জের বদলপুরের নদীপুর, সাতগাঁও হাইস্কুল, সাতগাঁও কমিউনিটি ক্লিনিক নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। সাতগাঁও গ্রামের বাসিন্দা সুশীল দাস প্রতিদিনের বাণী’র প্রতিনিধিকে জানায়, সাতগাঁও হাইস্কুল নদীর তীরে ছিল। ভাঙনের কবলে পড়ায় এটি স্থানান্তরিত করে পাকা দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। নদী ভাঙনের তীব্রতায় হাইস্কুল সহ বদলপুর – পাহাড়পুর রাস্তা সহ সংলগ্ন সাতগাঁও কমিউনিটি ক্লিনিকটিও ভাঙনের কবলে পড়ে নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে দরপত্র আহবান করলেও সংশ্লিষ্ট টিকাদার নামমাত্র কয়েকটি জিও ব্যাগ ফেলে দায়সারা কাজ করছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। অপরদিকে কাকাইলছেওয়ের বদরপুর, মনিপুর, সৌলরী, কাদিরপুর নজরাকান্দা, উমেদনগর, রুদ্রনগর সহ বেশ’কটি গ্রাম ইতিমধ্যে ভাঙন কবলিত। সম্প্রতি একই এলাকার নৃসিংহপুর ও সাহানগর গ্রামের তীর শুরু হয়েছে ভাঙন। ওই গ্রামের শিক্ষক ও হোমিও চিকিৎসক লিটন রায় জানায়, ভাঙতে ভাঙতে সাহানগর ও নৃসিংহপুর গ্রামের নিকট এসে গেছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে ভাঙনের তীব্রতা দেখা দিলে, কয়েকফুট দূরের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার শঙ্কায় রয়েছি আমি সহ গ্রামের বাসিন্দারা। মো, আবুল খায়ের জানান, বেশ কিছুদিন ধরে কুশিয়ারার কালনী নদীর তীব্র স্রোতে সাহানগর ও নৃসিংহপুর এলাকায় নদী ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সাহানগর ও নৃসিংহপুর গ্রাম সংলগ্ন নদীর তীরবর্তী এলাকার কৃষিজমির প্রায় ১৫ ফুট নদীগর্ভে ইতিমধ্যে বিলিন হয়ে গেছে। বাকিটুকু বিলীন হওয়ার পথে। এভাবে বিলীন হওয়া অব্যাহত থাকলে অচিরেই সাহানগর, নৃসিংহপুর গ্রামের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশংখায় বিনিদ্র রজনী কাটাচ্ছে গ্রামবাসী।
Leave a Reply