মাধবপুর প্রতিনিধি ॥ মাধবপুর উপজেলার শাহজিবাজার বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটনায় এখন পর্যন্ত উপকেন্দ্র থেকে পুরোপুরি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। এর প্রভাব পড়েছে শিল্প, চা বাগান ও গ্রাহক পর্যায়ে। এর আগে বিদ্যুৎতের এমন চরম ভোগান্তি গ্রাহকদের পোহাতে হয়নি। গত বৃহস্পতিবার থেকে আজ পর্যন্ত এ ভোগান্তি চলছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধা থেকে একটানা ২০ ঘন্টা বিদ্যুৎ ছিলনা। হঠাৎ করে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় চা বাগানের কারখানা বন্ধ হয়ে পড়ে। ছোট শিল্পকারখানায় ব্যাহত হয় উৎপাদন। হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম মো. জিল্লুর রহমান জানান,হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎতের চাহিদা ১৭০ মেঘাওয়াট। পার্শ্ববর্তী মৌলভীবাজার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা থেকে ১০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ এনে আপাতত গ্রাহকদের দেওয়া হচ্ছে। শাহজিবাজার উপকেন্দ্র পুরোপুরি মেরামত ও যন্ত্রপাতি বসানো হলে পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকদের আগের মত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে। বৃহস্পতিবার থেকে বিদ্যুৎ না থাকায় ছোট ছোট শিল্প কারখানা ও চা বাগানে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। বিশেষ করে চা বাগানে এখন সবুজ চা পাতা সংগ্রহ করার ভরা মৌসুম। কিন্তু হঠাৎ করে বিদ্যুৎ না থাকায় কাঁচা চা পাতা শুকানো যায়নি। তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক দেওয়ান বাহাউদ্দিন লিটন জানান,এভাবে হঠাৎ করে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ব আমরা চিন্তা করেনি। বিদ্যুৎ না থাকায় প্রচুর কাঁচা চা পাতা পচে যাবার উপক্রম। হবিগঞ্জ জেলার ছোটবড় ২৪ টি চা বাগান এমন বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।এছাড়া বিদ্যুৎ না থাকায় চা বাগানের কারখানার স্বাভাবিক উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটেছে। অপর দিকে বিদ্যুৎ না থাকায় বিপাকে পড়েন ইজিবাইক চালকরা। ইজিবাইকের ব্যাটারি চার্জ দিতে না পারায় ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চলাচল করতে পারছেনা। তাদের সংসারে দেখা দিয়েছে অভাব। শাহজিবাজার বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের উপসহকারী প্রকৌশলী মো: রাসেল খান জানান, আগুন ধরার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালান। পিডি ব্রেকার ফেলের কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের ফলে হবিগঞ্জসহ আশপাশের কয়েকটি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে। মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমরা বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এ দিকে হবিগঞ্জ জেলা শহরে বিদ্যুৎ না থাকায় বাসাবাড়িসহ হোটেল রেস্তোরায় পানি উত্তোলন করতে না পারায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্কুল কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ব্যাহত হচ্ছে।
Leave a Reply